ভাঁটফুলে ভরে গেছে পীরগঞ্জের মাঠ-প্রান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ৬ মার্চ , ২০২৫ ১৫:০৯ আপডেট: ৬ মার্চ , ২০২৫ ১৫:০৯ পিএম
ভাঁটফুলে ভরে গেছে পীরগঞ্জের মাঠ-প্রান্তর
ভাঁট Verbenaceae পরিবারের অন্তর্গত গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ।

ভাঁট Verbenaceae পরিবারের অন্তর্গত গুল্মজাতীয় বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক উদ্ভিদ। বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার অঞ্চল এদের আদি নিবাস। গ্রামবাংলার অতি পরিচিত এই বুনো উদ্ভিদ ভাইট, বনজুঁই বা ঘেটু নামেও পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Clerondendron viscosum।
ভাঁটগাছের প্রধান কাণ্ড সোজাভাবে দণ্ডায়মান। সাধারণত দুই থেকে চার মিটার লম্বা হয়। পাতা দেখতে কিছুটা তামাকপাতার মতো এবং খসখসে। লম্বায় সাধারণত চার থেকে সাত ইঞ্চি হয়।
ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশেল আছে। বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম অবধি ফুল ফোটে। এই ফুলের রয়েছে মিষ্টি সৌরভ।গাছের উপরিভাগ পুরোটাই ফুলে ফুলে পূর্ণ থাকে। আকৃতিতে বেলিফুল থেকে কিছুটা ছোট, তবে পাপড়ি সাধারণত পাঁচটি হয়ে থাকে। প্রতিটি ফুলের পুংকেশরও প্রায় পাপড়ির মতো পাঁচটিই থাকে। অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা এ ফুলটি প্রাকৃতিক মধু জোগানে অন্যতম উৎস। ফুল ফোটার পর মৌমাছিরা ভাঁটফুলের মধু সংগ্রহ করে।
গ্রামের মেঠোপথের ধারে, পতিত জমির কাছে এরা জন্মে থাকে এবং কোনো রূপ যত্ন ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। এ ছাড়া পাহাড়ি বনের চূড়ায় এবং পাহাড়ি ছড়ার পাশে এদের উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষণীয়। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এর মিষ্টি সুবাস পথিকদের কাছে টানতে বাধ্য করে। ভাঁটফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জীবনানন্দ দাশ তাঁর ‘রূপসী বাংলা’ কবিতায় লিখেছেন—
‘ভাঁট আঁশ শ্যাওড়ার বন/বাতাসে কী কথা কয় বুঝি নাকো/বুঝি নাকো চিল কেন কাঁদে/পৃথিবীর কোনো পথে দেখি নাই আমি/হায়, এমন বিজন।’
জ্যৈষ্ঠ মাসে ক্ষুদি জামের মতো ভাঁটফল পাকে। এ ফল থেকে চারা হয়।
ভাঁটগাছ ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর পাতার রস শিশুর জ্বর দূর করে। এ ছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভাঁট ফুল দিয়ে ভাঁটি পূজার আয়োজন করে থাকে।
এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকার জন্য এটি ক্যান্সার দমনে সহায়ক। এ ছাড়া কৃমি, চুলকানি, কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগার ও উদরাময় প্রভৃতি রোগ নিরাময়ে এটি সাহায্য করে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo