হুমকিতে ভোলা শহর রক্ষা বাঁধ, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবী

শরীফ হোসাইন প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল , ২০২৫ ১২:০০ আপডেট: ৯ এপ্রিল , ২০২৫ ১২:০০ পিএম
হুমকিতে ভোলা শহর রক্ষা বাঁধ, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবী
গ্রীষ্মের শুরুতেই ভোলার মেঘনা নদীর তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে

গ্রীষ্মের শুরুতেই ভোলার মেঘনা নদীর তীরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে শিবপুর মাছ ঘাটসংলগ্ন ৫০০ মিটার এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর মাত্র ৬০ মিটার গেলেই ভাঙবে শহর রক্ষা বাঁধ। দ্রুত বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ করা না হলে আসন্ন বর্ষায় ভাঙনের মুখে পড়তে পারে জেলা শহর। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বালুর জিওব্যাগ ফেলা হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গেল বর্ষায় সদর উপজেলার শিবপুর মাছঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। নদীর তীর থেকে প্রায় ৪০০ মিটার লোকালয়ের ফসলি জমি ও খামার তলিয়ে যায়। সম্প্রতি সেই ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সদর উপজেলার ধনিয়া থেকে দৌলতখানের মেদুয়া পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এলাকা হুমকিতে রয়েছে। কয়েকশ বছরের পুরোনো শিবপুর মাছঘাটের ৫০০ মিটার এলাকা বিলীনের পথে। আর ৬০ মিটার ভাঙলেই শহর রক্ষা বাঁধটিও বিলীন হয়ে যাবে। তখন জেলা শহরসহ সদর উপজেলার অর্ধেকই জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বসতির পাশাপাশি গুরুতর ক্ষতির মুখে পড়বে মেঘনা তীরের ৪ ইউনিয়নের কৃষি ও ব্যবসা বাণিজ্য।
শিবপুরের বাসিন্দা নুর হোসেন জানান, ভাঙন এলাকা থেকে জেলা শহরের দূরত্ব আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার। এখনই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে হুমকির মুখে পড়বে জেলা শহর। ঘাটের আড়ত মালিক আরিফ হোসেন জানান, শিবপুর ঘাটে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলো সরিয়ে নেওয়ার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। তাই ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপের পাশাপাশি স্থায়ী সমাধান চান তারা।
ভোলা শহরের বাসিন্দা মুবারক হোসেন, মো. আলম, নীরবসহ অনেকেই বলছেন, শিবপুরের মতো সদর উপজেলার ধনিয়া থেকে দৌলতখান উপজেলার মেদুয়া পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। যেভাবে মেঘনার পার ভাঙছে, তাতে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলে সমস্যার সমাধান হবে না। তার জন্য ব্লক বাঁধসহ টেকসই পদক্ষেপ নিতে হবে। নদীর তীর সংরক্ষণ ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও পদক্ষেপ গ্রহণের ধীরগতির অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকে।
পানি উন্নয়ণ বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউদ্দিন আরিফ জানান, বেশি ঝুঁকিতে থাকা বাঁধসংলগ্ন ২০০ মিটার রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলতে ৮০ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। স্থায়ী পদক্ষেপ হিসেবে ৪ কিলোমিটার এলাকায় মেঘনার তীর সংরক্ষণ ও ৬ কিলোমিটার এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে ৬২৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছে পাউবো। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo