সুতাংয়ের বুকে বিলীন স্বপ্ন:সরকারি বাঁধের দাবিতে বুল্লার বাসিন্দারা

পারভেজ মিয়া প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট , ২০২৫ ১৮:১২ আপডেট: ১৪ আগস্ট , ২০২৫ ১৮:১২ পিএম
সুতাংয়ের বুকে বিলীন স্বপ্ন:সরকারি বাঁধের দাবিতে বুল্লার বাসিন্দারা

 এক সময়ের শান্ত ও নিরীহ সুতাং নদী আজ লাখাই উপজেলার পশ্চিম বুল্লা গ্রামের কয়েকটি পরিবারের জন্য এক দুঃস্বপ্নের নাম। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা নদীভাঙনে বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন মোঃ দোলাই মিয়া, খেলু মিয়া, এলমেস মিয়া, দরবেশ মিয়া, হিরাজ মিয়াসহ আরও বেশ কিছু পরিবার। তাদের স্বপ্নের বাড়িঘর এখন নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে।

পরিবারগুলো নিজেদের পৈতৃক ভিটা হারিয়ে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে জায়গা কিনে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু ভিটেমাটি হারানোর বেদনা তাদের হৃদয়ে আজও জ্বলজ্বল করছে। তাদের অনেকে আজও মাঝে মাঝে নদীর ধারে দাঁড়িয়ে তাদের স্বপ্নের বাড়ির স্থানটি দেখতে যান, কিন্তু সেখানে নদী ছাড়া আর কিছুই নেই।

শুধু বসতবাড়ি নয়, পশ্চিম বুল্লা গ্রামের কবরস্থানেরও অনেক জায়গা নদীতে ভেঙে চলে গেছে। এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে অবশিষ্ট পরিবারগুলোকেও তাদের ভিটেমাটি ছাড়তে হতে পারে। গ্রামের বাসিন্দা আলী মিয়া এবং বাবুল মিয়ার মতো অনেকেরই বাড়িঘর ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে ।

স্থানীয়দের মতে, এই নদীভাঙন শুধু কিছু পরিবারকেই বাস্তুচ্যুত করেনি, একটি গোটা প্রজন্মকে যেন নদীর বুকে বিলীন করে দিয়েছে। তারা এখন সরকারের কাছে একটাই দাবি জানাচ্ছে। যদি নদীর কিনারে একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়, তাহলে বাকি পরিবারগুলো অন্তত তাদের বাপ-দাদার ভিটাতে টিকে থাকতে পারবে।

যে সুতাং নদীতে একসময় মানুষ গোসল করত, সাঁতার কাটত, আর জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত, সেই নদী আজ তার স্বাভাবিক প্রবাহ হারিয়েছে। দূষিত রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে এর পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে, ফলে এখন আর মাছও পাওয়া যায় না। একসময়ের প্রাণবন্ত সুতাং এখন যেন এক বিষণ্ণ নীরব সাক্ষী, যা তার বুকে ধারণ করে আছে হারিয়ে যাওয়া শত শত স্বপ্ন আর এক করুণ ইতিহাস।নদীটি তার স্বাভাবিক প্রস্থ এবং গভীরতা দুটোই হারিয়েছে। বুল্লা বাজারের পশ্চিম দিকে অবস্থিত পশ্চিম বুল্লা গ্রামের এই অংশটি এখন শুধুই ভাঙনের স্মৃতি বহন করে চলেছে। দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে আরও অনেক পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo