সাবেক সচিব অশোক মাধব রায় এর গেঁড়াকলে ধ্বংস হতে বসেছে বারদীর লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম।

নূর নবী জনি প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১২:০৬ আপডেট: ৩ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১২:০৬ পিএম
সাবেক সচিব অশোক মাধব রায় এর গেঁড়াকলে ধ্বংস হতে বসেছে বারদীর লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম।
নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম-এ অবৈধ আহ্বায়ক কমিটির অনৈতিক,স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ তছরুফ ও নিয়ম বহিঃভূত কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।

নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম-এ অবৈধ আহ্বায়ক কমিটির অনৈতিক,স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ তছরুফ ও নিয়ম বহিঃভূত কাজ করার অভিযোগ উঠেছে। পরিচালনার জন্য তিন মাস মেয়াদের আহ্বায়ক কমিটি সাত বছর গত হলেও পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনের কোন আলামত নাই। বারদী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম রক্ষার্থে পরস্পর অনৈক্য সৃষ্টি হওয়া হইতে রক্ষা করার জন্য বর্তমান দীর্ঘ সাত বছর যাবত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা অবৈধ আহ্বায়ক কমিটি বাতিলপূর্বক জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন কল্পে ইতোমধ্যে পুনরায় আবেদন করা হয়েছে। কুক্ষিগত করে রাখা অবৈধ আহ্বায়ক কমিটির অনৈতিক,স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি মূলক কার্যকলাপ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণে ধর্ম মন্ত্রণালয়,দূর্নীতি দমন কমিশন সচিব ও জেলা প্রশাসন বরাবর এর আগে লিখিত অভিযোগ দিলেও অশোক মাধব রায় ও তার অবৈধ আহ্বায়ক কমিটির দাপট এতটাই যে প্রশাসনও ছিলো নিরব,নির্বিকার। উল্লেখ্য গত ১৮/০৮/২০১৮ ইং তারিখে বারদী আশ্রম উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃক পূর্ববর্তী কার্যকরি কমিটি বাতিলপূর্বক তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক কমিটিতে অশোক মাধব রায়-আহ্বায়ক,শংকর কুমার দে-সদস্য সচিব,তাপস পাল-কোষাধক্ষ্য ও চারজন সদস্যসহ মোট ৭ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়,যাহা নিযুক্তিপত্র দলিল এর পরিপন্থী। আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্ব ছিলো তিন মাসের মধ্যে একটি নতুন কার্যকরী কমিটি গঠন এবং আশ্রমের রুটিন মাফিক কার্য পরিচালনা করা। কিন্তু উক্ত আহ্বায়ক কমিটি দীর্ঘ প্রায় সাত বছরেও একটি নতুন কার্যকারী কমিটি গঠন করে নাই এবং দূর্নীতি ছাড়া কোন নিয়ম মেনে রুটিন মাফিক কাজও করে নাই। সরেজমিনে গিয়ে আহ্বায়ক কমিটি কর্তৃক অনৈতিক,স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি মূলক কার্যকলাপ দেখা গেছে। তার হলো-১)১৯৮০ সালের ১৭৫০৮/১০৪৯ নং নিযুক্তিপত্র দলিলের ক্ষমতাবলে শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম কার্যকরী কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিলো। কিন্তু দলিলের কোথাও আহ্বায়ক কমিটির কথা বলা হয় নাই। উপদেষ্টা পরিষদ মনগড়া আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে যাহা দলিলের পরিপন্থী। ২)আহ্বায়ক কমিটিতে স্থানীয় পর্যায়ের কোন ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করা হয় নাই। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যক্তিদের কোন ভূমিকা নাই। আহ্বায়ক কমিটি অবৈধভাবে দীর্ঘ প্রায় সাত বছর যাবত নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আশ্রমের অবকাঠামো তৈরি করে, যাহা আহ্বায়ক কমিটির ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ইহাতে কোটি টাকা তছরুপ হয়। ৩)আহ্বায়ক কমিটির প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে আশ্রমে আত্মীয়-স্বজনদের (প্রায় ৭০ জনের বেশি) জনবল হিসেবে নিয়োগ দেয়,যা আহ্বায়ক কমিটির ক্ষমতার অপব্যবহার। ৪)বতর্মানে আশ্রমে সেবার মান খুবই খারাপ এবং ব্যয় সাপেক্ষ্য। তাছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অনেক ভক্তবৃন্দ আহ্বায়ক কমিটি কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্মচারী দ্বারা প্রতিনিয়ত চরম খারাপ ব্যবহারের সম্মুখীন হচ্ছেন। ইহাতে আশ্রমসহ বারদীবাসীর প্রতি ভক্তবৃন্দের খারাপ ধারনা জন্ম নিচ্ছে। ৫)আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শংকর কুমার দে এর নিজস্ব ১৫ থেকে ২০ জনের দাঙ্গা বাহিনী বিভিন্ন সময়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বজায় রাখার ফলে উক্ত বাহিনীর দ্বারা হতে যাওয়া মন্দির বহির্ভূত কার্যকলাপের  প্রতিবাদ করলে পরস্পর হানাহানি দাঙ্গা হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়। এতে লোকনাথ আশ্রমের ভক্তবৃন্দ বারদি বাসির মনে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।(৬)আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব শংকর কুমার দে আওয়ামী লীগ নেতার আস্থাভাজন ব্যক্তি ও জনকণ্ঠের প্রেস রিপোর্টার হওয়ার ফলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক আধিপত্য বিস্তার ও সাধারণ ভক্তবৃন্দের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করে আশ্রম পরিচালনা করে আসছেন। শংকর কুমার দে স্বজন প্রীতি,ক্রয় বাণিজ্য ও নিয়োগ বাণিজ্য সহ আশ্রমের জন্য স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়ের মাধ্যমে নিজে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে অসৎ কাজ করে মন্দির ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। বারদীবাসীর দাবী অতিবিলম্বে অশোক মাধব রায়  ও শংকর কুমার দে এর হাত থেকে আশ্রমটি উদ্ধার করা নাহলে,তাদের অনিয়ম দূর্নীতির কারণে অচীরেই তা ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা আরও বলেন,অতীতেও এই রূপ অচল অবস্থায় সৃষ্টি হলে এবং দুর্নীতি ঘটলে মাননীয় জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ এর হস্তক্ষেপে অচল অবস্থা দূর হয় এবং শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম মন্দির পরিচালনা লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক দায়িত্ব নিয়ে একটি জবাবদিহি মূলক কার্যকরী কমিটি গঠন করেন তখন। এ বিষয়ে জানার জন্য ফোন দিলেও জেলা প্রশাসককে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo