অসরৎ কঁৎরমৎধস কুড়িগ্রামের কর্মী সম্মেলনে মানুষের ঢল জাতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সীসাঢালা প্রাচীরের ঐক্য লাগবে-ডা. শফিকুর রহমান

মোঃ লাদেন মিয়া প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী , ২০২৫ ২২:৩৩ আপডেট: ২৫ জানুয়ারী , ২০২৫ ২২:৩৩ পিএম
অসরৎ কঁৎরমৎধস কুড়িগ্রামের কর্মী সম্মেলনে মানুষের ঢল জাতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সীসাঢালা প্রাচীরের ঐক্য লাগবে-ডা. শফিকুর রহমান
জাতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সীসাঢালা প্রচীরের মতো ঐক্য লাগবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছন, আমি বিনয়ের সাথে বলবো এমন কোন হটকারী কাজ করবেন না; যার কারণে আমাদের জাতীয় ঐক্য নষ্ট হয়। আমরা যেন কেউ চুরি-চামারি না করি।

জাতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সীসাঢালা প্রচীরের মতো ঐক্য লাগবে জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছন, আমি বিনয়ের সাথে বলবো এমন কোন হটকারী কাজ করবেন না; যার কারণে আমাদের জাতীয় ঐক্য নষ্ট হয়। আমরা যেন কেউ চুরি-চামারি না করি। চাঁদাবাজি না করি, দখল বাণিজ্য না করি। মামলা বাণিজ্য না করি। ফ্যাসিস্টদের যেন কোনরকম আশ্রয় প্রশ্রয় প্রদান না করি। গতকাল শক্রবার কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ মাঠে বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মী সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন জেলা আমীর মাওলানা আবদুল মতিন ফারুকী। জেলা সেক্রেটারি মাওলানা নিজাম উদ্দিনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন ও অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কুড়িগ্রাম জেলার সাবেক আমীর আজীজুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহবুব আলম সালেহী ও রংপুর মহানগর আমীর এটিএম আজম খান। এর আগে ক্বারী আব্দুল্লাহ আল আমীনের অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। সংগীত পরিবেশন করে ধরলা শিল্পী গোষ্ঠি, কুড়িগ্রাম কালচার‌্যাল একাডেমী। হাড় কাঁপানো শীত আর কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোর থেকেই দলে দলে লোকজন আসতে থাকে কর্মী সম্মেলনে। মানুষের ¯্রােত আসতে থাকে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ মাঠের দিকে। এদিন ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় মাঠ-ঘাট রাস্তা অলিগলি। আমীরে জামায়াত মঞ্চে উঠার আগেই সম্মেলনস্থল উপচে পড়ে। আশপাশের এলাকা মানুষে মানুষে সয়লাব হয়ে যায়। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মিললেও ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্য শোনার জন্য বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় হাজারো মানুষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা আর পিছনের তাকাতে চাই না। জাতি  সামনে আগাতে চায়। জাতিকে সামনে এগুতে হলে জাতির সীসাঢালা প্রাচীরের ঐক্য লাগবে। তিনি জাতি আশ^স্থ করেন, আমরা প্রতিহিংসার পক্ষে না। তবে খুনীদের মাফ নাই। প্রত্যেকটার খুনের বিচার হতে হবে।
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, আল্লাহর রাসুল মক্কা বিজয়ের সময় সমস্ত দুশমনদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। একটা  অপরাধ ছিল। তিনি বলেছিলের আজকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলো। কিন্তু যারা নিরীহ মানুষকে খুন করেছে, রাসুল তাদের দশ বা তেরজনের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, এদের যেখানে পাও সেখনেই খুন করো। খুন কখনো মাফ হয় না। আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা খুনের বিচার চাই। শুধু আমাদের নেতা কর্মী না। যত মানুষ খুন করা হয়েছে, অন্যায়ভাবে সবার বিচার চাই। ডা, শফিকুর রহমান বলেন, বৃহত্তর রংপুরবাসী আপনারা অনেক কারণেই গর্বিত। অথচ আপনারা বঞ্চিত। এই রৌমারীর বড়াইবাড়িতে যে যুদ্ধটা আপনারা অন্ধকারে করে শিক্ষাটা দিয়েছিলেন; সেই যুদ্ধের প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছে বিডিআরের পিলখানায়। এটা আপনাদের গর্বিত ইতিহাস এখনও চকচক করছে।
দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরে ফ্যাসিজমকে বিদায় করতে গিয়ে একজন মানুষ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশে^র ইতিহাসে তার সোনালি নামটা লেখা হয়ে গেছে। এই সন্তানটাও বৃহত্তর রংপুরের।  তিনি উপস্থিত জনতার দিকে প্রশ্ন রেখে বলেন তার নাম কি ? মাঠ থেকে জবাব আসে ‘আবু সাঈদ’।  সে এখন আমাদের বিপ্লবের আইকন। আমাদের প্রতীক, আমাদের সিপাহশালার। আমাদের বীর সেনাপতি। তার রাস্তা ধরে এবার যারাই জীবন দিয়েছে তাদের শহীদ হিসেবে কবুলের দোয়া করি। তাদেরকে যেন আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে পারি, সম্মানের সাথে বুকে ধারণ করতে পারি। শহীদ এবং পঙ্গুদের  কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এ ঋণ পরিশোধ করার শক্তি এ জাতির নেই। তবে যে কারণে তারা শহীদ হয়েছে, আমরা তাদের আমাদের প্রিয় সংগঠনের পক্ষ থেকে কথা দিচ্ছি, একটা দুর্নীতি মুক্ত, সুষম বৈষম্যহীন- মানবিক বাংলাদেশ না গড়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে ইনশা আল্লাহ। তিনি আবারো উচ্চারণ করেন, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’। যুদ্ধ সেদিন শেষ হবে মানবিক বাংলাদেশ যেদিন প্রতিষ্ঠিত হবে।  তার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। আমরা সমাজে অনাচার দেখলে প্রতিবাদ করবোই। তিনি বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে হলেও আমি প্রতিবাদ করবো। অনাচার যিনি করবেন তার ব্যাপারে আমরা মুখ বন্ধ করে থাকবো না। সেজন্যই আমরা রাজনীতি করি। আমরা ন্যায়ের পক্ষ নেবো, অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো।  যদি অন্যায় নিরবে হজম করি তাহলে আমিও অন্যায় কারীর মদদদাতা হয়ে গেলাম। আমরা এই অপকর্মের দায় নিতে চাই না।  এমনকি আমাদের দলের কেউ যদি এমনটা করে তাহলে বলবো তাদেরকে ধরেন, ছাড় দিবেন না। আমাদেরকে খবর দিবেন প্রশাসনকেও খবর দিবেন। এদের ব্যাপারে আমাদের জিরো টলারেন্স।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo