বগুড়ার চরাঞ্চলে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে যমুনার বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চরে বাদাম চাষ করেছেন স্থানীয় কৃষক গন ।
বগুড়ার চরাঞ্চলে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে যমুনার বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চরে বাদাম চাষ করেছেন স্থানীয় কৃষক গন । বন্যার পানি শুকিয়ে যমুনার বুকজুড়ে জেগে উঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য বালুচর। আর সেই চরেই বাদামের কচি গাছে সবুজ হয়ে ওঠেছে সে সব চরাঞ্চল। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় ফলন এবারও ভালো হবে বলে আশা করছেন চাষীরা। জানা যায়, চরাঞ্চলের বালি মাটি বাদাম চাষের জন্য উপযোগী। কম খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর সেখানে বাদামের আবাদ বাড়ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাদাম চাষিদের বীজ, সার ,সহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। বগুড়ার এই তিন টি উপজেলার ভিতর দিয়ে যমুনা নদী প্রবাহিত সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় যমুনার বিস্তীর্ণ চরে মরিচ ও ভুট্টার পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, তিনটি উপজেলার চরে চলতি মৌসুমে ১১৫ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল ৮৪ হেক্টর জমিতে। আগামী মৌসুমে ১৬৫ হেক্টর জমিতে ৭৩৩ টন চীনাবাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে কৃষকরা বলেছেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় উৎপাদন অনেক বেশি হবে। ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী চরের বাদাম চাষি আব্দুল বারিক জানান, প্রতি বছর বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্যা-পরবর্তী সময়ে জেগে ওঠা চরে বাদাম চাষ করি। অন্য ফসলের মতো তেমন একটা সার ও কীটনাশক বা পানি দিতে হয় না। শুধু সময়মতো বীজ বুনে বাদাম ঘরে তোলার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। বৈশাখী চরের আছাদ বলেন, শুধু বীজ রোপণ করলেই দুই-তিন মাস পরেই বাদাম ঘরে তোলা যায়।
বাদাম চাষে খরচ একেবারেই কম। এবার বিঘাপ্রতি ফলন ৮ থেকে ১০ মণ হবে। তিনি আরও বলেন, বাদাম বিক্রির জন্য হাটে যেতে হয় না । বেশিরভাগ সময় ব্যাপারী জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। কাঁচা অবস্থায় জমি থেকে বাদাম বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। আর শুকিয়ে বিক্রি হয় ১৫০ টাকা কেজিপ্রতি। ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ছামিদুল ইসলাম বলেন, এবার ৬৫ হেক্টর জমিতে চীনাবাদাম চাষ হয়েছে। চরাঞ্চলের কৃষকদের সরকারি কৃষি প্রণোদনা ও ফলোআপের মাধ্যমে বাদাম চাষে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছরে ১৬৫ মেট্রিক টন বাদাম উৎপাদ হবে । কয়েক বছর ধরে কৃষক গন চরে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষ অনেক লাভ জনক।