সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে আধাপাকা ধান থাকায় এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি বোরো ফসল কাটা। ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার আশঙ্কায় প্রশাসনের ৩টি দপ্তরের সরকারী ছুটি বাতিল ঘোষনা করা হয়েছে।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় শুরু হয়েছে বোর ধান কাটা। ধানের মৌ মৌ গ্রাণ কৃষক,কৃষানীদের মনকে মাতিয়ে তুলেছে। বেশির ভাগ জমিনে এখনো আধা পাকা ধান থাকায় পুরোপুরি শুরু হয়নি ধান কাটার মহোৎসব। আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিলের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া খবরে শঙ্কায় রয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকেরা। জেলায় তিন দপ্তরের ছুটি বাতিল করেছে প্রশাসন। হাওরে কৃষকদেরকে পাকা ধান দ্রত কাটতে নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। সব মিলিয়ে শঙ্কায় রয়েছে হাওরপারের কৃষকেরা।
চলতি মৌসমে সুনামগঞ্জ সদর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ধর্মপাশা,শান্তিগঞ্জ,জগন্নাথপু
কৃষকরা জানান,চলতি বছরে বোর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে এখনো অনেক জমির ধান আধাপাকা থাকায় তারা শত প্রতিক’ল পরিস্থিতিতেও ধান কাটতে পারছেন না । তারা আরো বলেন,শুনতেছি বন্যা বৃষ্টি আসতেছে, এনিয়ে ভয়ের মধ্যে আছি। এখানো ১৫ ভাগ ধান কাটা হয়নি জানালেন কৃষকেরা।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানালেন, চলতি মৌসমে ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। কোন ফোকা ধরেনি। প্রকৃতি অনুকুলে থাকলে নিশ্চিন্তে কৃষকরা এবার ঘরে উঠাতে পারবে ফসল।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া জানান,এই মাসের ১৮ এপ্রিল থেকে আবহাওয়া একটু প্রতিকূলে যেতে পারে। সেইক্ষেত্রে কৃষকরা দ্রæত পাকা ধানগুলো কেটে তাদের গোলায় তোলার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে চলতি বছরে এই জেলার ছোটবড় ১৩৭টির বেশী হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪১০ হেক্টর বোরো জমিতে উফসি ও হাইব্রীডসহ বিভিন্ন জাতের ধান চাষাবাদ করা হয়েছে । এবার ফসল ভাল হওয়াতে উৎপাদনের লক্ষমাত্র ধরা হয়েছে ১৩ লক্ষ ৯৬ হাজার মেট্রিকটন ধান। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা হবে বলে তিনি জানান।
সুনামগঞ্জে মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম বোর ফসল। এ ফসল রক্ষায় সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা হাওরপাড়ের কৃষকদের।