নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় নিখোঁজের ছয় দিন পর এক অটোরিকশাচালকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আইয়ুবপুর ইউনিয়নের ভুরভুড়িয়া গ্রামের একটি ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত অটোরিকশাচালকের নাম সোহেল রানা (২৫)। তিনি নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়ার কুমিল্লা কলোনি এলাকার মো. ছেদু মিয়ার ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে তারাবিহর নামাজ শেষে অটোরিকশা নিয়ে বের হন সোহেল রানা। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরদিন শুক্রবার সকালে শিবপুরের ভুরভুড়িয়া গ্রামে আবদুল মান্নান ভূঁইয়া কলেজের সামনে তাঁর অটোরিকশাটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে সোহেলের কোনো খোঁজ মেলেনি। আজ সকালে কলেজের পেছনের একটি ডোবায় কচুরিপানার নিচে তার লাশ ভেসে উঠতে দেখেন স্থানীয়রা। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে শিবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইসমাইল হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন। পরে সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এসআই ইসমাইল হোসেন জানান, "এটি ডাকাতি বা ছিনতাইজনিত হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে না। কারণ, সোহেলের অটোরিকশা ঘটনাস্থলেই পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "সম্ভবত ঘাড় ভেঙে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।" সোহেলের বড় ভাই সেলিম মিয়া বলেন, "কয়েক মাস আগে হাবিব নামের এক ব্যক্তি সোহেলের গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখিয়েছিল। এ ঘটনায় সোহেল নিজেই বাদী হয়ে হাবিবসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।" "মামলার পর থেকে হাবিব পলাতক ছিল। কিন্তু সোহেল নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই সে এলাকায় ঘুরছে। আগে থেকেই সোহেলকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তাই আমাদের সন্দেহ হাবিবের দিকেই।" শিবপুর থানার ওসি আফজাল হোসাইন বলেন, "ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর মামলা নেওয়া হবে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও দোষীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তদন্ত শুরু হয়েছে।" স্থানীয়রা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।