নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জয়ের বিষয়ে আ’লীগ সমর্থকদের দৃঢ়বিশ্বাস, আশাবাদী বিএনপি সমর্থকরা

নাম :রেজাউল হাসান প্রকাশিত: ১ এপ্রিল , ২০২৪ ০৭:৫৩ আপডেট: ১ এপ্রিল , ২০২৪ ০৭:৫৩ এএম
নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন জয়ের বিষয়ে আ’লীগ সমর্থকদের দৃঢ়বিশ্বাস, আশাবাদী বিএনপি সমর্থকরা
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের প্রার্থীতা ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের সাথে মতবিনিময় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যদিও নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলার ব্যস্ততা দেখলে যেকেউ মনে করবেন ভোট গ্রহনের দিন তারিখ অতি নিকটে চলে আসছে। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের প্রার্থীতা ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের সাথে মতবিনিময় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যদিও নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলার ব্যস্ততা দেখলে যেকেউ মনে করবেন ভোট গ্রহনের দিন তারিখ অতি নিকটে চলে আসছে।

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুরের নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের প্রার্থীতা ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি ভোটারদের সাথে মতবিনিময় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যদিও নকলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগ ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটে চলার ব্যস্ততা দেখলে যেকেউ মনে করবেন ভোট গ্রহনের দিন তারিখ অতি নিকটে চলে আসছে।

ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে ও নিজের পক্ষে ভোট পেতে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীরা গত দুই মাস আগে থেকেই ভোটারদের সাথে মতবিনিময় ও গণসংযোগ করতে মাঠে নেমে পড়েছেন। তাদের দেখাদেখি বিএনপি সমর্থক প্রার্থীরাও নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার মতো আওয়ামী লীগ সমর্থক যোগ্য ৪ নেতা এবং বিএনপি সমর্থক যোগ্য ২ জন মাঠে নিয়মিত কাজ করছেন। এদের কেউই রোজার দিনেও বিশ্রাম নিচ্ছেন না; বসে নেই প্রার্থীর কর্মীরাও।

নকলা উপজেলাটি জাতীয় সংসদ উপনেতা সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর নির্বাচনী এলাকার একটি অংশ হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সংগত কারনেই এখানে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক তথা ভোটার বেশি। এমনকি আওয়ামী লীগের সমর্থক সংখ্যা বিভিন্ন কারনে দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে বিএনপির তৎকালীন হুইপ জাহেদ আলী চৌধুরী মারা যাওয়ার পরে নকলায় বিএনপির হাল ধরার মতো যোগ্য নেতার খুব অভাব দেখা দেয়। যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ও বিভিন্ন নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় ভোটে অংশ গ্রহন না করায় বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। ঝিমিয়ে পড়েছে বিএনপির দাবী সংশ্লিষ্ট সকল আন্দোলন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বিএনপির ভোটার ও কর্মী-সমর্থকের সংখ্যা ক্রমেই কমছে।

সরকার দলীয় সমর্থকদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায়, সকল বাধা ওপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুযোগ নিতে কোমর বেধে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন বিএনপি সমর্থক দুই প্রার্থী। উভয় রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা দিবারাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দোয়া ও ভোট কামনা করছেন। তাদের অনেকেই ইতিমধ্যেই দোয়া সমর্থন কামনা করে জনবহুল স্থানে নির্বাচনী প্যানা ও ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রার্থীতা জানান দিয়ে দিন রাত এলাকায় গণসংযোগ করছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অন্তত দেড় ডজন প্রার্থী প্রতিদিন কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মতবিনিময়সহ দোয়া ও সমর্থন চেয়ে নানাভাবে ভোটারদের নজর কাড়ার চেষ্টা করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান বা অনুদানসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটারদের সমর্থন পেতে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

এরই মধ্যে ভোটারদের মধ্যে শুরু হয়েছে প্রার্থী যাচাই বাছাই কাজ। প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের জল্পনা কল্পনার যেন শেষ নেই। কে যোগ্য, জয়ের সম্ভাবনা কার বেশি, এ নিয়ে চা-পানের দোকানসহ জনবহুল প্রতিটি জায়গায় চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় মনোয়ন না থাকায় এবার ভোটাররা তাদের পছন্দের ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন বলে মনে করছেন।

কামাল মিয়া, রহিম উদ্দিন, আইনাল হক, ইউনুস আলী, ফরিদা বেগম, জুলেখা বেগম ও জমিলা খাতুনসহ অনেকে জানান, এবার যেহেতু দলীয় ভাবে কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবেনা, সেহেতু নিজ নিজ পছন্দের যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়া অধিকতর সহজ হবে। তারা আরো জানান, এর আগে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে দলীয় মনোনিত প্রার্থী থাকায় বাধ্য হয়েই তাকে ভোট দিতে হতো। ফলে অনেক সময় যোগ্য ও পছন্দের প্রার্থীকেও ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিলোনা। এবারের নির্বাচনে যে নির্বাচিত হবেন সে প্রকৃত পক্ষেই জনগনের ভোটে এবং সে আসলেই জনগনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হবেন বলে অনেকে মন্তব্য করেন।

আসন্ন নির্বাচনে ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতা ৪ জন এবং বিএনপি সমর্থক ২ জন নিরলস কাজ করছেন। আর পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক মিলে সম্ভাব্য প্রার্থী অন্তত ৭ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক মিলে সম্ভাব্য প্রার্থী অন্তত ৪ জন নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের সাথে মতবিনিময় ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীদের সক্রিয় কর্মীরা। তারাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীর গুণগান তুলে ধরছেন, তাদের প্রার্থীর পক্ষে চাইছেন দোয়া ও ভোট।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা অওয়ামী লীগের সদস্য শাহ মো. বোরহান উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিকুর ইসলাম জিন্নাহ, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.কে.এম মাহবুবুল আলম সোহাগ, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদার ও কুর্শাবাদাগৈড় এলাকার কৃষিবিদ মিজানুর রহমান এবং বিএনপি সমর্থক মো. মোকছেদুল হক শিবলু ও রাব্বীনুর চৌধুরী নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার দলীয় মনোনয়ন না থাকলেও বিভিন্ন বিবেচনায় স্বাভাবিক ভাবে বরাবরই দলীয় নেতারাই নির্বাচিত হয়ে আসছেন বা নির্বাচিত হবেন। সুতরাং নিজের দলের স্বার্থে দলের সুনাম রক্ষায় ছাড় দেওয়ার মনোভাবে নিজের মধ্যে সমন্বয় করতে না পারলে আওয়ামী লীগ সমর্থক প্রার্থীদের নির্বাচনের ফলাফলে ভুলের হিসেব দিতে হতে পারে বলে সাধারণ ভোটারগন মনে করছেন। আর বিএনপি সমর্থক সম্ভাব্য ২ প্রার্থীদের মধ্যে কোন ভাবে সমঝোতা হয়ে গেলে এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক ৪ জনই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলে বিএনপি সমর্থক চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিজয় সহজ হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন, নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত গৌড়দ্বার  ইউপির চেয়ারম্যানের স্ত্রী আলেয়া আক্তার আলো ও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচেনে পরাজিত প্রার্থী চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের লাকী আক্তার এবং  বিএনপি সমর্থক একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে নিরলস কাজ করছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দেওয়ান কহিনুর। আপাতত ৪  প্রার্থীর মধ্যে ৩ জন আওয়ামী লীগ সমর্থক ও বিএনপি সমর্থক একক প্রার্থী দেওয়ান কহিনুর। এই পদে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে ছাড় দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি না হলে, বিএনপি সমর্থক প্রার্থী বিজয়ের চমক দেখাতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক টালকী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্যসাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আকন্দ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবু হাম্যা কনক এবং বিএনপি সমর্থক দেওয়ান আল মামুন ও রেজাউল করিম মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া ধুকুড়িয়ার সুহেল রানা, লাভার আলম, গনপদ্দীর রাতুল ও ফেরুষার নোবেলসহ বেশ কয়েকজন ভাইস চেয়ারম্যার পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে সবাইকে জানিয়েছেন।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বেলায়েত হোসেন আকন্দ রাজনৈতিক ভাবে ও বয়সে অপেক্ষাকৃত সিনিয়র হওয়ায় পুরাতন ভোটারদের সমর্থন বেশি পাওয়ার আশাবাদী। এছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্যসাবেক সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় ও উপজেলা-ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সাথে ভালো সম্পর্ক থাকায় সকল ইউনিয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দের নজরে রয়েছেন তিনি। মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সকল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের নজর এখন তাঁর দিকে। আর সাংবাদিক পরিবারতো বাবুর জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করছেই। তাছাড়া সে স্পষ্টভাষী লোক হওয়ায় সাধারণ জনগনের দৃষ্টিও বাবুর দিকে। উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আবু হাম্যা কনক সবার আগে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীতা ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন। এরইমধ্যে অধিকাংশ ভোটারের সাথে দফায় দফায় দেখা করে ফেলেছেন। তরুণ ও নতুন ভোটারদের পছন্দের একমাত্র প্রার্থী যেন কনকই। এবিবেচনায় সে ভালো কিছুর আশাবাদী। তবে বিএনপির দুই প্রার্থীর মধ্যে কেউ একজন ছাড় দিলে ভাইস চেয়ারম্যান পদটিও হারাতে পারে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা।

উল্লেখ্য, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা নির্বাচন অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭৬ হাজার ১২৪ জন এবং ভোট কেন্দ্র ৭১টি।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo