নাটোর-১ (লালপুর–বাগাতিপাড়া) সংসদীয় আসনে নির্বাচনী রাজনীতি ক্রমেই জটিল ও উত্তপ্ত রূপ নিচ্ছে। ২৪শে ডিসেম্বর বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয়ভাবে মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলের বিপরীতে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন তারই আপন ভাই ডাঃ ইয়াসিন আরশাদ রাজন। একই সঙ্গে মনোনয়ন দৌড়ে যুক্ত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপু। ফলে এই আসনে বিএনপির ভেতরে সৃষ্টি হয়েছে বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিভক্তির আশঙ্কা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শুরু থেকেই একের পর এক প্রার্থীর আগমনে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একই পরিবারের সদস্যের প্রার্থিতা যেমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, তেমনি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা এডভোকেট তাইফুল ইসলাম টিপুর মনোনয়ন সংগ্রহে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের একাংশ মনে করছেন, একাধিক প্রার্থীর কারণে দলীয় ঐক্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এতে করে নির্বাচনী মাঠে বিএনপির ভোটব্যাংক বিভক্ত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
অন্যদিকে, এই জটিল রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকায় তিনি তুলনামূলকভাবে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। দলীয় ঐক্য, সুসংগঠিত কর্মীবাহিনী ও ধারাবাহিক মাঠপর্যায়ের তৎপরতার কারণে তাকে এই আসনে সম্ভাব্য বিজয়ী প্রার্থী হিসেবে দেখছেন অনেকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা যত দীর্ঘ হবে, ততই এর সুবিধা নিতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির। বিশেষ করে একক প্রার্থী ও সুসংগঠিত প্রচারণা যেকোনো নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে—যা জামায়াতের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
এখন সকলের দৃষ্টি বিএনপির কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে। তবে মাঠের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক সমীকরণ বিশ্লেষণ করলে নাটোর-১ আসনে নির্বাচন যত এগোবে, লড়াই ততই একপাক্ষিক হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।