কুড়িগ্রামের উলিপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিন রমনা মেইল নামের একটি ট্রেন চলাচল করছে। যেকোনো মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উলিপুর-চিলমারী রেল লাইনের বুড়ি তিস্তার উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেল লাইনের ব্রিজের উপর বসানো সেই আমলের কাঠের স্লিপারগুলো নষ্ট হয়ে অনেকটা ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘদিন এ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পর জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ পুনরায় এ লাইনে পার্বতীপুর হতে রমনা পর্যন্ত রমনা মেইল ট্রেন সার্ভিস চালু করেন। নতুন করে এ লাইনে রমনা মেইল ট্রেনটি চালু হলে ওই ব্রীজের নড়বড়ে স্লিপারগুলো যাতে নড়াচড়া করতে না পারে সেজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ লম্বা বাঁশ দিয়ে স্লিপারগুলো আটকিয়ে রাখে। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজের উপর দিয়ে দীর্ঘ প্রায় বছরেরও অধিক সময় ধরে নিয়মিত লোকাল ট্রেনটি চলাচল করছে। বর্তমানে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় এসে গেছে কাঠের সেই স্লিপারগুলো। সেই বাঁশও এখন পুরনো হয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
উলিপুর রেলওয়ে স্টেশন হতে রমনামুখি মাত্র দেড় থেকে দুই শত গজ দূরে অবস্থিত এ রেলওয়ে ব্রিজটির উপর দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় সহস্রাধিক লোক যাতায়াত করে থাকে। ওই ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচলকারী খয়রাত হোসেন, রুহুল আমীন, আইনুল, শাহানাজ, সবুজ ও ব্যাবসায়ী মুকুল মিয়াসহ অনেকেই জানান, বুড়িতিস্তার উপর ওই রেলওয়ে ব্রিজ হতে দুই দিকেই প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় অন্য কোন সড়ক সেতু বা ব্রিজ না থাকায় জোনাইডাঙ্গা, তবকপুর, মন্ডলপাড়া, সরদার পাড়া, মুন্সি পাড়ার লোকজন দুই থেকে তিন কিলো পথ না ঘুরে এ রেল ব্রিজ দিয়েই উলিপুর শহরে যাতায়াত করে থাকে। ইতিপূর্বে এখানে লোক যাতায়াত করতে দূর্ঘটনাও ঘটেছে বলে তাদের দাবি। এলাকাবাসী জানান, বর্তমানে ব্রিজটির স্লিপারগুলো না বদলালে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তারা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করে কাঠের স্লিপারগুলো দ্রুত বদলানোর আহবান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে তিস্তা অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ বজলুর রশীদ জানান, রমনা বেল্টে ঠিকাদারের কাজ চলমান আছে, স্লিপার বদলানোর কাজ শুরু হয়েছে, এক সময় ওই ভাঙ্গা স্লিপারগুলো বদলানো হবে। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে এর দায় কে নিবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করবো।