চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর ইউনিয়নের চর কলমী গ্রামে এঘটনা ঘটে। পরে আহাত অবস্থায় স্থানীয় গ্রামপুলিশরা তাকে উদ্ধার করে দুপুরে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহত চোর সদরদার শাহাজাহান মিন্টিজ ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছিডু চোরার ছেলে। কয়েক বছর আগে জেলখানাতে থাকা অবস্থায় তার বাবা চোরা ছিডা মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, চোর চক্রের সরদার মিন্টিজের পুর্ব পুরুষ থেকে সবাই চুরি ডাকাতিতে জড়িত। তার বাবা ছিডু ও একজন পেশাদার চোর ছিলেন। মিন্টিজ ভোলা জেলার গোটা দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে চুরি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অসংখ্য চুরি, ডাকাতি ও খুনের অসংখ্য মামলা রয়েছে। সম্প্রতি সময় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক বাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়। রোববার সকালে মিন্টিজকে চর আরকলমী গ্রামের নিজের বাড়িতে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে ধাওয়া করেন এবং জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে আটক করেন। পরে ওই ওই গ্রামের বারেক ফরাজীর বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেয় এবং দু’টি চোখ তুলে দিয়ে পুকুরের পাড়ে ফেলে রেখে যায়। পরে খবর পেয়ে ওই গ্রামপুলিশ মো. সোরহাব হোসেনসহ তাকে উদ্ধার করে তাকে চরফ্যাসন হাসপাতালে পাঠান। চরফ্যাসন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিন্টিজের পাশে অবস্থান করছেন তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম। গতকাল দুপুরে ফাতেমা বেগম জানান, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা লোকমান হোসেনের ছেলে সাকিবের নেতৃত্বে লোকজন বাড়ি থেকে ধাওয়া করে। ধাওয়ার মুখে ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায় মিন্টিজ। সাথে সাথে তিনিও জান। লোকজন ধাওয়া করে মিন্টিজকে জাহাঙ্গীর ফরাজির বাড়ি থেকে আটক করেন এবং বারেক ফরাজির বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে দেন এবং চাকু দিয়ে খুটিয়ে চোখ তুলে দেন। ঘটনার সময় তিনি সকলের সাথে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও ভয়ে নিজের পরিচয় দিতে পারেননি। স্থানীয়রা জানান, মিন্টিজ চুরি ডাকাতি ছিনতাইসহ নানান অপরাধে জড়িত। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা থাকলেও সে কোন কিছুতেই কেয়ার করেনি। গ্রামের মানুষ ভয়ে আতংকে কখনোই তার সামনে যাওয়ার সাহস পায়নি। ছাত্রদল নেতা মো. সাকিব তার নেতৃত্বে চোখ তুলে দেয়া হয়েছে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মিন্টিজ পেশাদার চোর। এবং চোর চক্রের সরদার। স্থানীয়রা তাকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে গণধোলাই দিয়ে চোখ তুলে দিয়েছেন বলে শুনেছি। চরফ্যাসন হাসপাতালে জরুরী বিভাগে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, মিন্টিজ নামের ওই ব্যাক্তিকে হাত-পা ভেঙে চোখ তুলে ফেলা হয়েছে। তার চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে এলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে। দক্ষিণ আইচা থানার অফিসার ইন-চার্জ এরশাদুল হক ভুইয়া জানান, স্থানীয়রা মিন্টিজকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে দুই চোখ তুলে দিয়েছেন বলে শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।