ফরিদপুরে ক্লু-লেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোঃ মোর্শেদ আলম।
ফরিদপুরে ক্লু-লেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোঃ মোর্শেদ আলম।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মোর্শেদ আলম জানান,
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ০২.৩০ টার দিকে ফরিদপুর কোতয়ালী থানাধীন আলিয়াবাদ ইউনিয়নের চর গজারিয়া (সাইনবোর্ড) এর পদ্মা নদীর দক্ষিণ পাশে জনৈক খালেক দেওয়ান এর মেহগনি বাগানের মধ্যে একটি অজ্ঞাতনামা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরবর্তীতে রহিমন বেগম নামে এক মইিলা সনাক্ত করেন যে লাশটি তার স্বামী হারুন অর রশিদ এর।এবং তিনি অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ১৮ ফেব্রুয়ারি কোতয়ালী থানায় একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলার দায়ের করেন।
দীর্ঘদিন অনুসন্ধান শেষে গত ১৮ এপ্রিল রাত ২.৩০ টার দিকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সাইদুল শেখ নামে একজনকে চরভদ্রাসন থানাধীন রমেশ বালার ডাঙ্গীর আসামীর বসত বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়। এবং হত্যাকান্ডের সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সাইদুল ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী লিটন মন্ডল ওরফে রুবেল (২৪) ও রুমান মন্ডল (১৭) এর নাম ঠিকানা প্রকাশ করে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামী রোমান এর বসত বাড়ী হতে রাত ০৩.০০ টায় তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ১টি লোহার পাতের চাকু বিছানার নিচ হতে উদ্ধার করা হয়। একই তারিখ অভিযান পরিচালনা করে অত্র মামলার ঘটনার মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী আসামী রুবেলকে রাত ০৩.৩০ টায় তার ভাইয়ের বাড়ীর সামনের দোকানঘর হতে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন আসামী রুবেল ১৫০ টাকায় ভ্যান চালক হারুনকে সন্ধ্যার পর চর গজারিয়ার সাইনবোর্ড এলাকার জন্য ভাড়া নেয়। পথিমধ্যে তার অপর দুই সহযোগীও যোগ দেয়। সেখান থেকে ০৩জন হারুনের ভ্যানসহ হারুনকে সাথে নিয়ে সাইনবোর্ড এলাকার পদ্মা নদীর দক্ষিন পাশে জনৈক খালেক দেওয়ান এর মেহগনি বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। এসময় আসামী রুবেল একটি ধারালো চাকু বের করে হারুনকে ভয় দেখিয়ে ভ্যান রেখে চলে যেতে বলে। তখন হারুন অনুনয়-বিনয় করলে আসামী রুমান ও আসামী সাইদুল হারুনকে বলে- 'বেঁচে থাকলে আবার ভ্যান কিনতে পারবেন। এখান থেকে চলে যান'।
এ কথা বলার পর ভ্যান চালক হারুন রুমান ও সাইদুলের দিকে ঘুড়লে আসামী রুবেল তার হাতে থাকা চাকুর ধারালো অংশ দিয়ে হারুনে মাথায় পিছন থেকে আঘাত করলে হারুন মাটিতে পড়ে যায়। তখন রুমান, সাইদুল ও রুবেল ৩জন মিলেই হারুনের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারংবার আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে ডিসিস্ট নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামী রুবেল, আসামী রুমান ও আসামী সাইদুলকে বাড়ী চলে যেতে বলে এবং সে ভ্যানের ব্যবস্থা করে এসে তাদের সাথে দেখা করার কথা বলে। পরে রুবেল হারুনের পরিহিত হুডি দিয়ে হারুনের মাথা ঢেকে দিয়ে ভ্যান নিয়ে হাজিগঞ্জের দিকে চলে যায়। পরবর্তী সাক্ষাতে আসামী রুবেল আসামী রুমানকে লুন্ঠিত ভ্যান বিক্রয়ের ১ হাজার টাকা দেয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইমদাদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, কোতোয়ালি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান সহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ফরিদপুরের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।