নাটোরে এক অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষনের পর হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সহ ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে নাটোর জেলা ও দায়রা জজ এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষনা করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নাটোর সদর উপজেলার উলুপুর গ্রামের জব্বার হোসেনের ছেলে মোঃ বেলাল হোসেন ও তার স্ত্রী বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দিন প্রামানিকের মেয়ে মোছাঃ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিন। দন্ডপ্রাপ্ত মোঃ বেলাল হোসেন পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদি নাটোর সদর থানার এসআই নুরুজ্জামানের দায়েরকৃত এজাহার সুত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারী সকালে নাটোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জনৈক নুর মোহম্মদ মুন্সির আম ও কলাবাগানের মধ্যে ৩৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক নারীর গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মহিলাদের ব্যবহৃত একটি পাম ব্যাগ উদ্ধার করে। পরে ওই ব্যাগের মধ্যে থেকে দন্ডপ্রাপ্ত মোছাঃ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনের পাসপোর্ট সাইজের সাদাকালো একটি ফটো ও টেলিফোন গাইড বই পাওয়া যায়। ওই বইয়ে জোসনা খাতুনের নাম, বাবার নাম ও ঠিকানা সহ তার ভাই খোরশেদ আলমের নাম ও তেবাড়িয়া দাদাপুর রাস্তা লেখা ছিল। এছাড়া বেশ কয়েকজনের ফোন নম্বর লেখা ছিল। পুলিশ সুরৎহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে প্রেরণ করে। এব্যাপারে নাটোর সদর থানার তৎকালীন এসআই নুরুজ্জামান বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
সুরৎহাল ও ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়। ওই মামলা দায়ের পর ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া পাসপোর্ট সাইজের সাদাকালো ছবি ও নাম ঠিকানার সূত্র ধরে পুলিশ মোছাঃ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনকে আটক করে। পরে জেসমিনের স্বীকারোক্তিতে তার স্বামী বেলাল হোসেন জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ইত্যবসরে মামলার আসামী জেসমিনের স্বামী জামিন নিয়ে গা ঢাকা দেয়। দীর্ঘ এক যুগ পর সোমবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার সময় জেসমিন উপস্থিত থাকলেও তার স্বামী বেলাল হোসেন হাজির ছিলেননা।
আদালতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষনের পর হত্যার দায়ে বিজ্ঞ বিচারক মামলার দুই আসামী স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। এছাড়া উভয়কেই ১ লাখা টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। জরিমানার টাকা রাষ্টিয় কোষাগারে জমা করার আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী বেলাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।