তানোরে শতবর্ষ পুরোনো হিন্দুসম্প্রদায়ের শ্মশানের বেহাল দশা বর্ষার আগেই সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে গ্রামবাসীর আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল , ২০২৫ ১৩:৪৩ আপডেট: ২৬ এপ্রিল , ২০২৫ ১৩:৪৩ পিএম
তানোরে শতবর্ষ পুরোনো হিন্দুসম্প্রদায়ের শ্মশানের বেহাল দশা বর্ষার আগেই সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবিতে গ্রামবাসীর আহ্বান
রাজশাহীর তানোর পৌরসভার অন্তর্গত হালদারপাড়া ও গোল্লাপাড়া গ্রামের শত বছরের পুরনো হিন্দু শ্মশান আজ চরম অব্যবস্থাপনার শিকার

রাজশাহীর তানোর পৌরসভার অন্তর্গত হালদারপাড়া ও গোল্লাপাড়া গ্রামের শত বছরের পুরনো হিন্দু শ্মশান আজ চরম অব্যবস্থাপনার শিকার। শ্মশানের পাশেই সরকারি খাদ্য গুদামের (গোডাউন) সন্নিকটে এই স্থানটি একসময় এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। বর্তমানে সেটি পরিণত হয়েছে চরম সংকটপূর্ণ ও অসম্মানজনক পরিবেশে। প্রতিদিনের মতো এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন যখন প্রিয়জনকে শেষ বিদায় জানান, তখন তারা সম্মানের সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ ও পরিপাটি স্থান প্রত্যাশা করেন। কিন্তু শ্মশানের পাশেই বড়সড় ড্রেন থাকায় প্রতি বর্ষায় ভাঙন দেখা দেয়। মাটি ধসে পড়ে চারপাশের কবরসমূহ প্রায় বিলীন হয়ে যায়। সংকীর্ণ জায়গার কারণে একটি কবরের ওপর আরেকটি কবর খুঁড়ে মৃতদেহ দাফন করা হচ্ছে। ফলত, পিতা-মাতা কিংবা পূর্বপুরুষদের কবরের কোনো চিহ্ন থাকছে না—এটি তাদের হৃদয়বিদারক কষ্টের অন্যতম কারণ। গ্রামবাসীর পক্ষে মনোতোস,মনোহরি ও বিশু স্বর্ণকারসহ স্থানীয় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষজন জানিয়েছেন, এই শ্মশানে একাধিক গুণীজন, শিক্ষাবিদ, এমনকি সাবেক প্রিন্সিপালদেরও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। সেই মর্যাদার স্থান আজ অবহেলার চূড়ান্ত উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা জানিয়েছেন, অবিলম্বে শ্মশানের চারপাশে মজবুত পাঁচিল নির্মাণ না করলে বর্ষায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।
এই পরিস্থিতিতে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিয়াকত সালমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন গ্রামবাসীরা। তারা অনুরোধ জানিয়েছেন, বর্ষার আগেই জরুরি ভিত্তিতে এই শ্মশানটির সংস্কার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হোক। শুধুমাত্র একটি সম্প্রদায়ের নয়, এটি মানবিক ও নৈতিক দায়িত্বও বটে। শ্মশানটি শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, বরং ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি গ্রামবাসীর অনুরোধ—এই বেহাল দশা থেকে মুক্ত করে শ্মশানটিকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনা হোক।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo