ঠাকুরগাঁওয়ে ব্রি ১০২ ধান চাষে নতুন দিগন্ত আনছে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৭ মে , ২০২৫ ১৭:১৬ আপডেট: ২৭ মে , ২০২৫ ১৭:১৬ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ে ব্রি ১০২ ধান চাষে নতুন দিগন্ত আনছে

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে এবার একই জমিতে তিন ফসল চাষের আশা জাগাচ্ছে নতুন জাতের জিংক সমৃদ্ধ ধান ব্রি ১০২। দুইবার প্রধান ফসল ধান উৎপাদনের পর একই জমিতে চাষ করা যাচ্ছে পাট কিংবা সরিষা সহ অন্যান্য ফসল। আজ বিকেল ৪ টায় বসলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ১০২ ধানের কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা শামীমা নাজনীন। তিনি বলেন,জিংক সমৃদ্ধ চিকন জাতের এই ধান উৎপাদন করে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে রোগবালাইমুক্ত হওয়ায় ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও কম হচ্ছে।ঝড় বৃষ্টিতে এই ধান সহজেই হেলে পড়ে না।ফলে কৃষকের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা কম। জিংক সমৃদ্ধ এই ধান আবাদে তিনি বিভিন্ন পরামর্শ দেন।ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বসলগাঁও গ্রামে মোজাহার আলী নামের এক কৃষকের মাঠ ভর্তি এক ধানের সফলতার গল্পটা নতুন। বলা হচ্ছে ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাত ব্রি ১০২ এর কথা। একই জমিতে তিন ফসল উৎপাদন, তার মধ্যে চিকন জাতের অধিক ফলনশীল রোগবালাইমুক্ত জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ১০২ ধান আশা জাগাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকদের মনে।প্রথমবারের মতো এই হরিপুর উপজেলায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্হা আরডিআরএস বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় ব্রি- ১০২ ধান আবাদ হয়েছে বসলগাঁও এলাকায়। নতুন এই জাতের ধানের জাতকে ঘিরে কৃষকদের আগ্রহ বেশ। লম্বা, চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু।বসলগাঁও গ্রামের কৃষক মোজাহার আলী জানান, আমি এক একর জমিতে এই ধান আবাদ করেছি। ৩৩ শতাংশ জমিতে ৩০ মনের অধিক ফলন পেয়েছি।এই ধান জিংক সমৃদ্ধ হওয়ায় ধানের চাহিদাও বাজারে বেশ। হরিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবেল হোসেন জানান, ব্রি-১০২ জাত বেশ উন্নত জাত।এই ধান অন্যান্য ধানের তুলনায় রোগবালাই এর আক্রমণ কম হয়। গ্রামের অন্য কৃষকরা বলেন,পুরানো জাতের ধানের তুলনায় এই ধান শক্তিশালি। গেল ক’দিনের ঝড়ো বাতাসে অন্য ধান নুয়ে পড়লেও এটি পক্ত অবস্থায় আছে সে সাথে উৎপাদনও বেশ ভাল ।আরডিআরএস বাংলাদেশ এর টেকনিক্যাল অফিসার কৃষিবিদ মোজাম্মেল শেখ বলেন, কৃষকদের জিংক ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে এবং মানবদেহে জিংক এর গুরুত্ব, ব্রি ধান ১০২ উৎপাদন প্রক্রিয়া, ফলন, কৃষকদের প্রযুক্তি বিস্তার, রোগ বালাইসহ নানা দিক তুলে ধরেন এবং মানুষের দেহে জিংকের ঘাটতি পুরণে কৃষকদের বেশি করে জিংক সমৃদ্ধ ধান চাষ ও এধানের চালের ভাত খাওয়ার পরামর্শ প্রদান ছাড়াও জিংক সমৃদ্ধ ধানের উৎপাদন নিশ্চিত করতে ও কৃষক পর্যায়ে মানসম্পূর্ন ধানের বীজ সরবরাহ এবং উৎপাদিত ধান সংগ্রহ করে মিলারের মাধ্যমে চাল স্থানীয় বাজারে সহজলভ্য করার জন্য ইএসডিও এবং হারভেষ্টপ্লাসের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন,বোরো মৌসুমে আবাদ উপযোগী ব্রি ১০২ আধুনিক উপসী ধানের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। সাদা চিকন জাতের এই ধানে আছে ২৫.৫ মিলিগ্রাম জিংক। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রান্তিক পর্যায়ের প্রায় ১২০ জন কৃষক অংশ নেন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo