বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টায় জামালপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। পুরো আয়োজনজুড়ে ছিল গভীর আবেগ, প্রতিবাদ ও সংকল্প।অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। এরপর পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীদুজ্জামান।পরে একে একে বক্তব্য দেন ছাত্র আন্দোলনের জেরিন, ফয়সাল আহম্মেদ, আরিফুল ইসলাম, নাফিসা আলম দিয়া, সম্রাট হোসেন, ওয়াসিম উল সামি, আমিমুল এহসান, আহাদ হোসেন, আফরিন জান্নাত আঁখি এবং আবিদ সৌরভ।বক্তারা বলেন, “জুলাই শহীদরা শুধু একটি আন্দোলনের অংশ নন, তারা এই প্রজন্মের প্রতিরোধের প্রতীক। তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে বিচার চাই, ন্যায়বিচার চাই।”তারা আরও বলেন, “জুলাই বিপ্লবের সনদ জুলাইয়েই দিতে হবে। এই শহীদদের মৃত্যুর বিচারিক কার্যক্রম শুরু না হওয়া পর্যন্ত দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।”বক্তৃতায় উঠে আসে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন, বৈষম্য ও স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামের দৃপ্ত উচ্চারণ। বক্তারা বলেন, “কে বলেছে কে বলেছে—স্বৈরাচার স্বৈরাচার”, “তুমি কে আমি কে—রাজাকার রাজাকার”—এই শ্লোগানগুলো আজ সময়ের দাবি। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তখন প্রকম্পিত হচ্ছিল প্রতিবাদী শ্লোগানে। মনে হচ্ছিল, যেন আবারও ফিরে এসেছে উত্তাল ২০২৪-এর সেই জুলাই, যখন শিক্ষার্থী ও তরুণদের রক্তে ভিজেছিল রাজপথ।আলোচনার এক পর্যায়ে বক্তারা রাষ্ট্রের ভেতর চলমান ন্যায়বিচারহীনতার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “গুম, খুন, হয়রানি আর বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান চাই। শহীদেরা আমাদের দায় রেখে গেছেন—আমরা যেন সেই দায় ভুলে না যাই।”অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময় উপস্থিত সবাই মোমবাতি হাতে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা জানান ‘জুলাই শহীদ’দের প্রতি।এই আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, ছিল প্রতিশ্রুতি—আরও বৃহৎ ও সংগঠিত আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার। আয়োজকদের ভাষায়, “এই স্মরণ নয় থেমে থাকার, বরং আবার জেগে ওঠার। কারণ, শহীদেরা স্বপ্ন দেখেছিলেন যে বাংলাদেশ, সেটি এখনও বাস্তব হয়নি।”