জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের কাজীপাড়া এলাকায় এক পিতা নিজের ১৫ বছর বয়সী কন্যাকে হত্যার নৃশংস ঘটনা ঘটান। পরে পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়, যারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
শনিবার (১০ মে) রাত ৩টা থেকে ৬টার মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তি মো. জাহিদুল ইসলামের কন্যা জান্নাতি খাতুন (১৫)কে হত্যা করে বাড়ির পাশের একটি ভুট্টা ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পরবর্তীতে জান্নাতির চাচা মো. খলিল হক (৫৫) থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, জাহিদুল ইসলামের প্রতিবেশী মজিবরগং পরিবারের সঙ্গে ৩২ বিঘা জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে জাহিদুল ইসলাম তার প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পনায় নিজ কন্যাকে হত্যার নীলনকশা করেন।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, জাহিদুল ইসলাম তার স্ত্রী মোছা. মোর্শেদা বেগম (৩৮) এবং ভাইয়ের স্ত্রী মোছা. শাহিনুর বেগম (৪৫)-এর সহযোগিতায় রাতের অন্ধকারে জান্নাতিকে লোহার রড ও দা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ ভুট্টা ক্ষেতে ফেলে খরের পুলিতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
কুড়িগ্রাম পুলিশের ডিবি ও থানা টিম মাত্র ৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত চালিয়ে মূল হত্যাকারী জাহিদুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের সহায়তায় বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ে মাটির নিচে পোতা অবস্থায় হত্যার অস্ত্র (৩৩ ইঞ্চি লম্বা লোহার রড ও একটি দা) উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত তিন আসামী ১২ মে কুড়িগ্রামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পুলিশ মামলার তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার বজলার রহমান ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, “অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও তদন্তে সাফল্য পুলিশের সক্ষমতা দেখিয়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আইনানুগ ব্যবস্থা চলছে।”