চিরিরবন্দরে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সোনালী রঙের আমের মুকুল।

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১৭:৩১ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১৭:৩১ পিএম
চিরিরবন্দরে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সোনালী রঙের আমের মুকুল।
বইছে ফালগুনী হাওয়া। বসন্তের শুষ্ক আবহাওয়ায় চারিদিকে নজর কাড়ে সবুজের সমাহার। সেজেছে এক অপরুপ সাজে।

বইছে ফালগুনী হাওয়া। বসন্তের শুষ্ক আবহাওয়ায় চারিদিকে নজর কাড়ে সবুজের সমাহার। সেজেছে এক অপরুপ সাজে। সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে সোনালী রঙের আমের মুকুল। চারিদিকে সোনালি শোভা। যেমন তার সৌন্দর্য, তেমনি তার ঘ্রাণ। মৌ মৌ ঘ্রাণে মাতোয়ারা মৌমাছির দল। সর্বত্রই গাছে গাছে মুকুল। চিরিরবন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাসিন্দাদের বাসা-বাড়িতে রোপণ করা আম গাছগুলোতে ফুটেছে মুকুল। শুধু বাসা-বাড়িতেই নয়, অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন আমবাগান। এছাড়া অফিস-আদালত কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাছেও দোল দিচ্ছে মুকুল। এসব মুকুলের ডগায় ডগায় দেখা মিলেছে আমের গুটির। এ যেন হলুদ আর সবুজের মিলনমেলা। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে চাষিদের আশা এবার আমের ফলন ভালো হবে। তবে নিয়ম মেনে শেষ মাঘ মাসে যেসব গাছে মুকুল আসবে সেসব গাছে মুকুল স্থায়ী হবে বলে কৃষি বিভাগ জানায়। 
এখন বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আবার কেউ কেউ উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। যাতে আমের রঙ, ফলন ও দাম ভালো পাওয়া যায়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে যেমন উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও পরিবহন, রপ্তানিসহ বাজারজাত করতে পারলে কৃষকেরা লাভবান হতে পারবেন বলছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের উপজেলা গুলোতে হিমসাগর, গোপালভোগ, মিশরীভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, গৌরমতি, আম্রপালি, ব্যানানা, কার্টিমন, বারি-৪, নাগফজলি, হাড়িভাঙ্গা, রুপালীসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ হচ্ছে। রফিকুল হক, আফছার আলীসহ কয়েকজন আম চাষি জানান, মুকুল আসার আগে আম গাছের পরিচর্যা করতে হয়। নিয়মিত স্প্রে ও সেচ দেয়া শুরু হয়েছে। এবছর কিছুটা আগেই আমের গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আম গাছে মুকুল আসতেই ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা আসছেন এবং বাগানে বাগানে গিয়ে খবর নিচ্ছেন। আবার অনেকেই আগাম আম বাগান ক্রয় করছেন। চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউপির আমি চাষিরা জানান, আমার আমগাছে এবার প্রচুর মুকুল এসেছে। গত দুই বছর ধরে গাছে আগাম মুকুল আসছে। এ মুকুল টিকে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. আনিছুজ্জামান বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে আবহাওয়াগত ও জাতের কারণে মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়ে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এখানকার আম সুস্বাদু হওয়ার কারণে বিদেশেও রপ্তানি হয়। তবে জেলায় এখনও এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা জানান, “জেলায় চলতি আমের মৌসুমে ৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। আম চাষিদের যাতে আমের ভাল ফলন হয় সেই জন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে তাদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আম চাষিরা ভাল ফলন পাবেন।”

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo