চিরিরবন্দরে চমক হিসেবে আশা জাগাচ্ছে সমতলের চা বাগান

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ৬ মে , ২০২৫ ১৭:১০ আপডেট: ৬ মে , ২০২৫ ১৭:১০ পিএম
চিরিরবন্দরে চমক হিসেবে আশা জাগাচ্ছে সমতলের চা বাগান

কৃষিনির্ভর জেলা দিনাজপুর চিরিরবন্দরে জলোচ্ছ্বাস, ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঠিক তেমন নেই। এই উপজেলাটির মাটিও উর্বর। ধান, লিচু,আম,আলু,গম,ভুট্টাসহ কমবেশী সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। দেশের খাদ্য উৎপাদন যথেষ্ট অবদান রাখছে এ উপজেলাটি। এখানে চমক হিসেবে সমতল ভূমিতে চা চাষের সাফল্য বেড়েছে । চা চাষ করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে এ অঞ্চলের চাষিরা।

২০১৪ সালে উত্তরাঞ্চলের সমতল ভূমি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় প্রথম ক্ষুদ্র পর্যায়ে চা চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে এর পরিধি বেড়ে জেলার বোচাগঞ্জ, পার্বতীপুর, বিরামপুর , খানসামা ও চিরিরবন্দরে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চা। চা বাগানটিতে সব গাছে উঁকি দিচ্ছে দুটি পাতার নতুন কুঁড়ি। শুরু হয়েছে পাতা সংগ্রহের ব্যস্ততাও।

চিরিরবন্দর উপজেলার মরিয়ম চা বাগানের শ্রমিক দিলিপ কুমার বলেন, আমি এই বাগানে চায়ের পাতা তুলি। আগে বাসায় কাজ না থাকলে দূরে যেতাম কাজের জন্য। এখন বাসার কাছে চা বাগান হওয়ায় কিছুটা শান্তিতে আছি। তবে চা বাগানে কাজের মজুরিটা একটু কম। বাগান মালিক যদি আমাদের মজুরিটা বাড়িয়ে দেন তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। কারণ বাজারে সব জিনিসের দাম অনেক।
চা শ্রমিক বালা রানী বলেন, চা বাগানটি বাসার কাছে হওয়ায় খুব ভালো হয়েছে। বাসার কাছে চা বাগান হওয়ায় এখানে কাজ করে সংসারে সহায়তা করতে পারছি। তবে নারী শ্রমিকদের মজুরিটা কম হয়েছে। আমরা চাই আমাদের মজুরি আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়া হোক।চিরিরবন্দর উপজেলার মরিয়ম টি বাগানের মালিক এম আতিকুর রহমান বলেন, কৃষির জেলা দিনাজপুর হলেও এই উপজেলার কৃষকরা অবহেলিত। এখানকার কৃষকরা যাতে অবহেলিত না থাকে বা কৃষি শ্রমিকরাও যাতে বেকার না থাকে সেই চিন্তা থেকে চিরিরবন্দর উপজেলায় সাতনালা ইউনিয়নের ২০২০ সালে চায়ের বাগান শুরু করি। প্রথমে প্রায় ৫ একর জমিতে শুরু করি। এক বছরের মাথায় চা পাতা তুলা শুরু করি। দেখলাম অন্য জেলার তুলনায় আমার বাগানে পাতার ফলন ভালো। তখন বাগান বাড়িয়েছি। এখন প্রায় ১২ একর জমির ওপর মরিয়ম চা বাগান।

তিনি আরো বলেন, এখানে চা বাগান করে স্থানীয় শতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের পরিকল্পনা আছে খুব দ্রুত আমরা এখানে চায়ের ফ্যাক্টরি বানাবো এবং মরিময় টি বাগানের চা বাহিরের দেশে রপ্তানি করব।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে চা চাষ। আমাদের উপজেলার সাতনালা ও ফতেজংপুর ইউনিয়নে প্রায় ১৭ একর জমিতে চায়ের চাষ হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চা চাষিদের।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo