বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর/২৪) বোকাইনগর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে বোকাইনগর ইউনিয়নের বেতান্দর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কর্মী শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর/২৪) বোকাইনগর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে বোকাইনগর ইউনিয়নের বেতান্দর উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কর্মী শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বোকাইনগর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আল মামুন ফকির। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি আনিসুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা বদরুজ্জামান, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা মো. আবু ইউসুফ। আলোচনায় অংশ নেন ময়মনসিংহ জেলার নোঙর সংস্কৃতি বিভাগের উপজেলা শাখার পরিচালক মোখলেছুর রহমান, বোকাইনগর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম সানি, শাহিন খান, তাজুল ইসলাম, মোতাহার হোসেন বিল্লাল, মানসুর আলী, শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রহিম, ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মোজাম্মেল হক আকন্দ বলেন, আমাদের পরিচয় কি? কুরআনে আমাদের দুইটি পরিচয়। একটা পরিচয় হচ্ছে আমরা আল্লাহ তা'আলার বান্দা। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তঁার ইবাদত করার জন্য। আমাদের আরেকটা পরিচয় হচ্ছে আমরা আল্লাহ’র খলিফা। আমাদের সমাজে পীর সাহেবেরা খলিফা বানায় হাজার হাজার মুরিদ করে থাকেন। মুরিদের মধ্য থেকে যিনি বেশি যোগ্যতার অধিকারী তাকে খলিফা বানানো হয়। যিনি খলিফা হন তার মর্যাদা বেড়ে যায়। পীর মারা যাওয়ার পর ওই খলিফা তখন পীর হয়ে যান। আল্লাহ তা'আলার সাথে পীরের কোন তুলনা চলে না। তাহলে হাজার হাজার মুরিদের মধ্যে যিনি খলিফা থেকে পীর হয়ে যান তার মর্যাদা বেড়ে যায়। দুনিয়াতে যারা আল্লাহর খলিফা হিসেবে কাজ করেন তাদের মর্যাদা আরো অনেক বেশি। এজন্য আমাদের পরিচয় হচ্ছে আল্লাহর খলিফা। একটা কল্পনা করলে অন্যরকম অনুভূতি আসে যে আমরা আল্লাহ তা'আলার খলিফা। আল্লাহ তা'আলা দুনিয়াতে খলিফা প্রেরণ করেছেন আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দিন কায়েম করার জন্য। কোন মুসলমান যদি আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করার জন্য প্রচেষ্টা না করে সে আল্লাহ তা'আলার খলিফা হতে পারে না। এজন্য আমাদের পরিচয় হলো আমরা আল্লাহ তা'আলার খলিফা। আমাদের দায়িত্ব হলো আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করার চেষ্টা করা। তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে বিশেষ নিয়ামত দিয়েছেন। এই জালেম সরকারের পতন ঘটিয়ে। তা না হলে আমরা এই সুন্দর পরিবেশে আল্লাহর দ্বীনের কথা বলতে পারতাম না। গোপনে সতর্কতার সাথে কোন প্রোগ্রাম করা হলে সরকার বলতো আমরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রোগ্রাম করতেছি। নিজের ঘরে থাকা যেত না। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া যেত না। এই কঠিন পরিবেশ থেকে আল্লাহ তা'আলা আমাদের মুক্তি দিয়েছেন। আল্লাহ তা'আলা এখন সুন্দর নিরাপদ পরিবেশ দিয়েছেন। এটা হলো আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি নিয়ামত। এত তাড়াতাড়ি সরকারের পতন হবে আমরা তো আশা করি। আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী ছিলাম এই সরকারের পতন হয়ে যাবে। কিন্তু এত অল্প সময়ে, এত অল্প জীবনের বিনিময়ে সরকারের পতন হবে তা ভাবিনি। আমাদের আশঙ্কা ছিল আরো বেশি জীবন যাবে। আল্লাহ তা'আলার অশেষ মেহেরবানী খুব সহজে আমাদেরকে একটি নিরাপত্তা পরিবেশ দিয়ে দিলেন। এটি আল্লাহর অশেষ নিয়ামত। আল্লাহ তা'আলা বলেছেন তোমরা যদি নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করো, আমি তোমাদের নিয়ামত অবশ্যই বাড়িয়ে দিব। আর যদি তোমরা নিয়ামত পাওয়ার পর সেই নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় না কর, তাহলে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন তোমাদের হতে হবে। আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান এই সুন্দর পরিবেশে যথাযথ হক আদায় করে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে লেগে যান। তিনি আরও বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন আল্লাহ তা'আলা যেন তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করেন। যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতা কামনা করছি ।