রংপুরের গংগাচড়ার বড়বিল ইউনিয়নে মন্থনা বাজারের পাশে জমি দখলের নামে জ্ঞানগৃহ আইডিয়াল মডেল স্কুলে হামলা চালানো হয়েছে।
রংপুরের গংগাচড়ার বড়বিল ইউনিয়নে মন্থনা বাজারের পাশে জমি দখলের নামে জ্ঞানগৃহ আইডিয়াল মডেল স্কুলে হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল প্রায় ৩.৩০ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রায় শখানেক লোকজন ইট,বাশের লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্কুল এবং এর স্টাফদের ওপর হামলা করছে। স্কুলের চারপাশের বাউন্ডারি, টিনের চালা সহ একাধিক স্থাপনায় তারা ভাঙচুর চালিয়েছে।ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে ৪০০ ছাত্র- ছাত্রীর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অংশ। থানায় খবর দেয়া হলে এর অল্পকিছুক্ষণ পরেই এস আই প্রশান্ত কুমার স্যারের নেতৃত্ব পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব ওজায়ের হোসেন বলেন, আমার স্কুলে বর্তমানে ৪০০+ বাচ্চারা পড়াশুনা করছে।আমি আমার পরিবার সহ এখানেই বসবাস করি।স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই একটা মহল স্কুলকে ধ্বংসের পায়তারা করছে। এর অগ্রযাত্রা বন্ধ করতে না পেরে, হিংসাত্বক ভাবে সহজে মিমাংসা করার মতোএকটি বিষয়কে উস্কানি দিয়ে তারা হামলার পথ বাতলে দেয়া।বিবাদ মিমাংসার জন্য কয়েক দফা থানায় বসতে চাইলেও তারা নিজেরা সময় নিয়ে উপস্থিত হয়নি। পরিশেষে আজকে তারা সশস্ত্র ভাবে আমার স্কুলের ওপর হামলে পড়েছে।আমার মাকে জখম করেছে।স্কুলের অভিভাবক রা এগিয়ে আসলে তাদের একজন মজিবুর রহমানের মাথায় কোপ দিয়েছে।সেলাই পড়েছে।আমার ছোট ভাইকে বেধরক পিটিয়েছে।অল্পের জন্যে চোখ টা বেঁচে গেছে। প্রশাসনের নির্বিকার অবস্থানের কথা বলে ওজায়ের হোসেন বলেন, গত ৭ জানুয়ারি তারা স্কুল চলাকালীন অবস্থায় স্কুলে এসে হুমকি দিয়ে যায়।এ প্রেক্ষাপটে আমি অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ আসেনি। এরপর কোর্ট থেকে ১৪৪ ও ১৪৫ ধারা জারি করা হলেও তারা পিছপা হয়নি। তিনি আরও বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধার জায়গা থেকেই শুরু থেকেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসি স্যার,ভূমি অফিসার কে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।একাধিকবার যোগাযোগ করেছি।এমনকি পুলিশ সুপারকেও বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু এর কোন সুরাহা হয়নি। আর আজ সুযোগ পেয়ে তারা আমাদের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ করেছে। আমি আমার প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।আমার পরিবার নিয়ে শঙ্কিত।স্কুলের ছোট ছোট বাচ্ছাদের নিয়ে শঙ্কিত। পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যায্য বিচার ও নিরাপত্তা চাই। উপস্থিত অনেকের সঙ্গেই কথা বলে জানা যায়, জমির দাগ সংক্রান্ত ভুলের জেরে সমস্যাটি ১ বছর থেকে চলে আসছে।একই দাগের জমি উভয়ই কিনেছেন বলে দাবি করেন।যা বিক্রেতাদের ভুল বলে প্রতীয়মান। তবে এসবের পিছনে তৃতীয় একটি মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে তারা মনে করেন। যারা বিবাদমান বিষয়টির সমাধান হউক তা চাননা। স্কুলটির প্রতি হিংসাত্বক মনোভাবের কারনেই তারা একের পর এক উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন। এসব ব্যাপারে, অভিযুক্ত রফিকুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার কষ্টের টাকায় কেনা জমি জোড় পূর্বক ভাবে দখল করেছে তারা।আমি আমার জমি ফেরত নেবোই।এতে আমার যা হবার হবে।হামলার ব্যাপারে বললে তিনি এর বিপরীত পক্ষকে দোষারোপ করেন। অভিযোগের ব্যাপারে থানায় খোজ নিয়ে জানা যায়, ভারপ্রাপ্ত উপ পরিদর্শক জনাব আল ইমরান স্যার ছুটিতে আছেন। ওসি তদন্ত স্যারের সঙ্গে যোগাযোগকালে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে নিষ্ঠার সঙ্গে আমরা সবকিছু তদারকি করছি। প্রতিষ্ঠানের একজন ছাত্রের বাবা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ ধরনের ঘটনা এলাকার ভাবমূর্তি খুন্ন করসে। শালিসে ধরা না দিয়ে এভাবে পরিকল্পিত হামলা করে রফিকুল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে।আদালত অবমাননা করেছে।টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে এনেছে।রফিকুল বলে সে গরীব অথচ দেওয়ানীদের পিছনে লাখ লাখ টাকা ঢালতেছে।আমাদের সন্তানরা এখানে পড়ে।আমরা প্রতিষ্ঠান এর উপর তাদের হামলার বিচার চাই। প্রশাসনের কাছে স্কুলের সেফটি চাই। এসময় এস.আই প্রশান্ত কুমার স্যার,ইতিমধ্যেই উপস্থিত হওয়া রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রামায়াতের উপজেলা নায়েবে আমির জনাব তাজউদ্দীন, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য শোয়াইবুর রহমান উভয় পক্ষকে বুঝিয়ে আপাতকালীন পরিস্থিতি শান্ত করেন।মিমাংসার মধ্যেই কল্যাণ আছে বলে উভয় পক্ষকে শালিস বৈঠকে বসার গুরুত্বারোপ করেন। সর্বশেষ পরিস্থিতি জানা যায়, উভয় পক্ষের মধ্যেই চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। রংপুর মেডিকেলে মারাত্বক জখমে ভর্তি থাকা স্কুল কর্তৃপক্ষের দুজনের ক্ষতস্থানে সেলাই, ব্যন্ডেজ দিতে হয়েছে।ছিন্সভিন্ হয়ে পড়ে রয়েছে স্কুলের চতুর্দিক। এমতাবস্থায় ন্যায্যতার ভিত্তিতে উভয় পক্ষের সহাবস্থান জরুরি। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মনে করেন নেটিজেনরা।