উলিপুরের কৃষকরা মাচা পদ্ধতিতে টমেটো চাষে লাভবান

মোঃ রেজাউল ইসলাম প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১৪:৪০ আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১৪:৪০ পিএম
উলিপুরের কৃষকরা মাচা পদ্ধতিতে টমেটো চাষে লাভবান
উলিপুর উপজেলায় টমেটো চাষে কয়েক গুণ লাভ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। ভালো ফলন ও বাজারে টমেটোর চড়া দামে খুশি চাষিদের মুখে এখন হাসি।

উলিপুর উপজেলায় টমেটো চাষে কয়েক গুণ লাভ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। ভালো ফলন ও বাজারে টমেটোর চড়া দামে খুশি চাষিদের মুখে এখন হাসি। গ্রীষ্মকালীন বারি হাইব্রিড টমেটোর চাহিদা বাজারে ব্যাপক হওয়ায় এবং স্বল্প ব্যয়ে চাষ করে অধিক লাভের আশায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা মাচা পদ্ধতিতে টমেটো চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও উর্বর মাটির কারণে এ বছর টমেটোর ফলনও হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উলিপুরে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে, যার মধ্যে টমেটো চাষও উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে, যা টমেটো চাষে সাফল্য এনে দিয়েছে। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা বিভিন্ন জাতের টমেটো চাষ করেছেন। এর মধ্যে বারি হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষে আগ্রহ বেশি। সাধারণত গ্রীষ্মকালীন বারি হাইব্রিড টমেটো গাছ লাগানোর ২-৩ মাসের মধ্যে ফল ধরতে শুরু করে এবং চার থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত টমেটো সংগ্রহ করা যায়। মাচা পদ্ধতিতে চাষ করায় ফলন বেশি হওয়ার পাশাপাশি নষ্টও কম হচ্ছে। দলদলিয়া ইউনিয়নের টাপুরকুটি গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, তিনি ৮ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করেছেন। প্রতি গাছে ৪০-৫০টি টমেটো ধরেছে এবং প্রতি কেজি টমেটো ১৮-২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এ পর্যন্ত তার ৫০ মণ টমেটো বিক্রি হয়েছে, যা থেকে তিনি ৪০ হাজার টাকা আয় করেছেন। আরও ৩০-৪০ মণ টমেটো বিক্রির আশা করছেন তিনি, যা থেকে অতিরিক্ত ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় হতে পারে বলে জানান। হাফিজুর রহমান আগামীতেও আরও বেশি জমিতে টমেটো চাষ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। গুনাইগাছ ইউনিয়নের চাষি রুহুল আমীন বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি প্রথমবারের মতো ৩৩ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। এবার তার ফলন অনেক ভালো হয়েছে এবং তিনি আশা করছেন, এ থেকে তিনি অনেক লাভবান হবেন। উপজেলার আরও অনেক চাষি, যেমন এরশাদ, রমজান আলী, রাজু মিয়া ও মোকলেস মিয়া জানান, গত বছর বৈরি আবহাওয়ার কারণে টমেটো চাষে লোকসান হয়েছিল। কিন্তু এ বছর তারা বারি-৪, বারি-৫ ও টিপু সুলতান জাতের টমেটো চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। বাজারে দাম ভালো থাকায় তারা এবার লাভবান হচ্ছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, দলদলিয়া ইউনিয়নের টাপুরকুটি গ্রামে তার ব্লকে কৃষকরা টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষ করেছেন। ফলন ভালো হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। তিনি নিয়মিত মাঠে গিয়ে চাষিদের রোগবালাই ও পোকামাকড় দমনে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন জানান, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে মাত্র দুই থেকে আড়াই মাসেই কৃষকরা ব্যাপক ফলন পেয়ে থাকেন। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং বাজার দর ভালো হওয়ায় কৃষকরা অনেক লাভবান হচ্ছেন। তিনি আগামীতেও বেশি বেশি বারি হাইব্রিড টমেটো চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo