প্রত্যন্ত গ্রামের ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে বগুড়ার আদমদীঘিতে দুইতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ১ বছরের বেশি সময় আগে।
উপজেলার চাঁপাপুর ইউপির বিহিগ্রামে গ্রামীণ বাজারের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের এই নির্মান কাজ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে এখনও দুইতলা ভবনের দোকান ঘরগুলো বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। আর এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে ভবনে ফাটল। অপরদিকে এক বছরের বেশি সময় ধরে পড়ে থাকার কারণে এই বাজারটির ভবনগুলো এখন জুয়া ও মাদক সেবীদের দখলে। এছাড়া নিচ তলায় গরু- ছাগলের অবাধ বিচরণ দেখে মনে হতে পারে এটা গরু-ছাগলের আবাস স্থল।
জানা যায়, ২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর উপজেলার চাঁপাপুর ইউপির প্রত্যন্ত গ্রাম “বিহিগ্রামে” ২ কোটি ৬৪ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা ব্যয়ে আধুনিক মানের দুইতলা গ্রামীণ বাজার ভবনের কাজ শুরু করে। ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয় গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে বিহিগ্রামের এই হাটের দোকান বরাদ্দের একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তবে এই বিজ্ঞপ্তির এক বছর পার হলেও দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়নি ব্যবসায়ীদের। এদিকে নির্মাণের দেড় বছরের মধ্যেই ভবনে দেখা দিয়েছে ফাটল। স্থানীয়রা বলছেন নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে হাটের ভবনে ফাটলের দেখা দিয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাজের মান নিয়ে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিতাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় ভবনের দেওয়ালের রং উঠে গেছে, ফাটল ধরেছে বিভিন্ন জায়গায়। ভবনের নিচ তলার এক পাশে বসে মাদক সেবন করছে কয়েকজন, অন্য পাশে দেদারছে চলছে জুয়া। অন্যদিকে গরু-ছাগলের বিচরণ। ভবনের বিদুৎ সরবারহের জন্য সোলারের ব্যাটারিগুলো পরিতাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় বেশি ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে।
বিহিগ্রাম মধ্য পাড়া এলাকার আলিফ নামের এক যুবক বলেন, সরকার আমাদের এই গ্রামের ভিতরে এতো টাকা ব্যায়ে হাটটি নির্মাণ করে দিয়েছে। কিন্তু নির্মাণের দীর্ঘ দিন হলেও হাটের দোকান ঘরগুলো ব্যবসায়ীদের বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না। আর ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে, ভেঙ্গে যাচ্ছে। বিষয়টি প্রসাশনকে দেখার দাবী জানান তিনি।
রিমন নামের স্থানীয় এক যুবক বলেন, এই হাটটি যে উদ্দেশ্য নিয়ে করা, সেই উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে না। গরু-ছাগল, মাদক সেবীদের আবাসস্থলে পরিনত হয়েছে। আমাদের স্থানীয়দের দাবী যতদ্রæত সম্ভব হাট ভবনটি উদ্বোধন করে ব্যবসায়ীদের দোকান ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হোক।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা বলেন, দোকান ঘর বরাদ্দের জন্য ইউএনও স্যার জেলা প্রসাশক কার্যালয়ে তালিকা পাঠিয়েছেন। আমরা যতদ্রæত সম্ভব হাটের দোকান বরাদ্দ দেওয়ার চেস্টা করবো। হাটের ভবনের ফাটলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি ফাটল ধরে বা রং উঠে যায়, তাহলে তা মেরামত করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা নিবার্হী অফিসার রোমানা আফরোজ বলেন, অল্প সময়ের মধ্যেই হাটের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে।
হাট ভবনে জুয়া ও মাদক সেবীদের বিষয়ে জানতে চাইলে আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রাজেশ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। আমরা সম্প্রতি ঐ এলাকা থেকে বেশ কয়েক জন মাদক সেবীকে গ্রেফতার করেছি। হাট ভবনে কেউ জুয়া বা মাদক সেবন করতে পারবে না। আমারা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।