সোনাইমুড়ীতে আটকের পর সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু, মারধর ও চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ

মোঃ হানিফ প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী , ২০২৫ ১৬:২১ আপডেট: ১৫ জানুয়ারী , ২০২৫ ১৬:২১ পিএম
সোনাইমুড়ীতে আটকের পর সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু, মারধর ও চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা হাসপাতালে মারা গেছেন।

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা হাসপাতালে মারা গেছেন। সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। আটকের পর মারধর এবং সময়মতো চিকিৎসা না দেওয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজন ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা। তবে পুলিশ অভিযাগ অস্বীকার করেছে। নিহত আবদুর রহমান (৩৪) সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের ছায়েদুল হকের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই মো. হানিফ মুঠোফোনে  সাংবাদিকদের বলেন, চাচাতো ভাই আবদুর রহমান ও ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে (২৫) রোববার দিবাগত রাত চারটার দিকে বাড়ি থেকে আটক করেন যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। আটকের পর তাঁদের মারধর করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। পরে সকালে দুজনকে সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়। হানিফের দাবি, পুলিশে সোপর্দ করার পর থানায় গিয়ে দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু দুজনকে বিকেল পাঁচটায় আদালতে পাঠানো হয়। আদালত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বললে পুলিশ সাড়ে পাঁচটার দিকে দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর আবদুর রহমান মারা যান। পুলিশ চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে সারা দিন থানায় রাখায় আবদুর রহমান মারা গেছেন অভিযোগ করে হানিফ আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অত্যাচারের কারণে ২০১২ সালের পর থেকে এলাকাছাড়া ছিলেন আবদুর রহমান। ৫ আগস্টের পর এলাকায় আসেন তিনি।’ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজিব আহমেদ  বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ আবদুর রহমান ও হাবিবুর রহমানকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে আবদুর রহমান মারা যান। তাঁদের দুজনেরই শরীরে জখম ছিল। তবে কাটাছেঁড়া ছিল না। এক প্রশ্নের জবাবে রাজিব আহমেদ বলেন, হাবিবুরের অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। তিনি আতঙ্কিত বোধ করছেন বলে মনে হয়েছে। জানতে চাইলে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে যৌথ বাহিনী পুলিশের কাছে আবদুর রহমান ও হাবিবুর রহমানকে হস্তান্তর করে। তখন তাঁদের অবস্থা ভালো ছিল না। এ কারণে তখনই তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।সেখানে চিকিৎসা দিয়ে ১০টা ৫০ মিনিটে থানায় আনা হয়। এরপর তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে ৩টা ১০ মিনিটে আদালতে পাঠানো হয়।’ ওসি আরও বলেন, আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মারামারির ঘটনায় দায়ের হওয়া আগের তিনটি মামলা রয়েছে। হাবিবুরের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাঁদের কাছ থেকে রাইফেলের দুটি গুলি ও তিনটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান  বলেন, ‘যৌথ বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন হিসেবে সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুর রহমানসহ চারজনকে আটক করা হয় বলে শুনেছি। তাঁদের মধ্য থেকে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয় আর দুজনকে আটক ও মারধর করা হয়। সময়মতো আদালতে না পাঠিয়ে থানায় আটকে রাখায় চিকিৎসার অভাবে আবদুর রহমান মারা গেছেন। আমরা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo