চলতি ইরিবোরো মৌসুমে লাখাই উপজেলার হাওড় জুড়ে ভাটি এলাকায় ধানের ক্ষেতে মাজরা পোকার আক্রমণ কিছুটা দমন হলেও,থেমে নেই উজান জমির ইরিবোরো ধান চারা। জানা যায়, মাজরাপোকা দমনে হাটবাজারে থেকে বিভিন্ন কিটনাশক জমিতে কিটনাশক স্প্রে করে ভাটি জমিনের কিছুটা প্রতিকার পাচ্ছেন কৃষকরা,কিন্তু উজান জমিতে মাজরাপোকা ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা, ফলে চলতি ইরিবোরো মৌসুমে কাঙ্খিত ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা।৬নং বুল্লা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের গঙ্গানগর মৌজার বুরুজ বাড়ী নামক হাওর ঘুরে দেখা যায়,সারা হাওর জুড়ে মাজরাপোকা এবং পাতামোড়ানো রোগে আক্রান্ত ধান চারা।জমিনে কাজ করা কৃষক আরিফ উদ্দিনের সাথে আলাপ কালে জানান,তিনি এপর্যন্ত ৩বিঘা জমিনে ১০ হাজার টাকার কীটনাশক ব্যবহার করছেন,ভাটি জমিনে কিছুটা উপকার হলেও উজান জমিন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। বিভিন্ন কৃষকদের সঙ্গে আলাপ কালে জানান,ধান গাছে ফলন আসার এমন মহুর্তে মাজরাপোকা ও পাতা মোড়ানোর আক্রান্ত জমি নিয়ে অনেকটাই হতাশ, বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা। ফলে লোকসানের আশংকা করছেন অনেকেই। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় কিটনাশক প্রয়োগ করার পরও প্রতিকার না পাওয়ায় বাজার জুড়ে ভেজাল রাসায়নিক ও কিটনাশকের ব্যপারে সন্দেহ পোষণ করেন একাধিক কৃষক।কৃষি উপজেলা অফিসের তথ্য অনুযায়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১১হাজার ২শত ৮ হেক্টর।এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান ৬হজার ৭শত৫ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল উপসী ৪ হাজার ৪৯৮ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতে বীজ ৫ হেক্টর। এর মধ্যে হাওরে ৮ হাজার ৩শত ২২ হেক্টর এবং হাওর ছাড়া ২ হাজার ৮ শত ৭৬ হেক্টর।উল্লেখযোগ্য জাতের সমুহের মধ্যে রয়েছে ব্রি-ধান ১০৪.৯২.৮৯,৮৮ ও বিনা ধান ২৫। এছাড়াও হাইব্রিড হীরা এসএল ৮, ব্র্যাক ৩, শক্তি ১, সুরভী ১ আবাদের তালিকায় রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে মাজরাপোকা দমনের জন্য জমিতে কঞ্চি-ডালপুতে দিলে উপকৃত হবেন কৃষক। এছাড়াও যতাযত নিয়মে ও সময়ে ইনসিপিও- বেল্ট এক্সপার্ট-বায়োচমক-লিভা ব্রাভো প্রয়োগ করলে মাজরাপোকাসহ অন্যান্য সমস্যাগুলো নিরসন করা সম্ভব। ভেজাল কিটনাশকের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, মূলত কিটনাশকের সঠিক পরিমাপ ও নির্ধারিত সময়ে স্প্রে না করার কারনে কোন কোন কৃষক এর সুফল পাচ্ছেন না। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর নিয়মিত তদারকি করে আসছে।