সিলেটের ওসমানীনগরে গত বছরের বন্যায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় ক্ষত সেরে উঠার পূর্বেই আরেকটি বর্ষাকাল প্রায় দ্বার প্রান্তে। গত ১০ বছরে ওসমানীনগরে বিশেষ করে সিলেট-২ আসন(ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) সরকারদলীয় সংসদ সদস্য না থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সার্বিক দিক দিয়ে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল এই আসনের দুই উপজেলা ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
সিলেটের ওসমানীনগরে গত বছরের বন্যায় যোগাযোগ ব্যবস্থায় ক্ষত সেরে উঠার পূর্বেই আরেকটি বর্ষাকাল প্রায় দ্বার প্রান্তে। গত ১০ বছরে ওসমানীনগরে বিশেষ করে সিলেট-২ আসন(ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ) সরকারদলীয় সংসদ সদস্য না থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সার্বিক দিক দিয়ে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল এই আসনের দুই উপজেলা ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
যোগ্য অভিভাবক না থাকায় প্রয়োজনীয় বরাদ্দ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যার কারণে ওসমানীনগরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ অত্যন্ত সুচনীয় পর্যায়ে রয়েছে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক এখনো পাকাকরণ করা হয়নি আর যেগুলো পাকা সড়ক রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অধিকাংশ পাকাসড়কের অবস্থা বেহাল। দীর্ঘদিন থেকে ভাঙ্গাচুড়া ও সংস্কারহীন থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন উপজেলাবাসী। উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের বন্যায় উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক রাস্তার ৮০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত এক বছরে ক্ষতিগ্রস্ত এই ৮০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১ কিলোমিটার সড়কেরও সংস্কার হয়নি। সম্প্রতি ২৫টি উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কের টেন্ডার সহ ওয়ার্ক ওয়ার্ডার প্রক্রিয়াধিন রয়েছে বলে জানা গেছে।
গোয়ালাবাজার-বালাগঞ্জ ১৬ কিলেমিটার রাস্তা দিয়ে প্রায় ৪০টি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলার অর্ধলক্ষাধীক মানুষ চলাচল করেন এ রাস্তা দিয়ো। ২০০৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সরকটি উদ্বোধন করা হয়। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার পানিতে সড়কটি তলিয়ে গেলে ভেঙ্গে পড়ে সড়কের পাকা অংশ। অন্য দিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভারি যানবাহন চালিয়ে রাস্তার অবশিষ্ট ভাল অংশও ভেঙ্গে দেয়া হয়। কালাসারা হাওর পারের প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা মারাত্মকত ভাঙ্গাচুড়া খানাখন্দে বেহাল অবস্থা। এই রাস্তার পাশে কালাসারায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নবনির্মিত ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন করা হয়। এ কারণে রাস্তার গুরুত্ব এখন আরো বেড়ে গেছে। এ রাস্তা দিয়ে এখন অসংখ্য রোগী আসা যাওয়া করেন। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার অদূরে অবস্থিত এ রাস্তার করুণ দশা হলেও দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার করা হয়নি সড়কটি।
এদিকে গোয়ালাবাজার-খাদিমপুর,তেরহাতি সিকন্দরপুর,শনিরবাজার-মান্দারুকা, উমরপুরবাজার-মান্দারুকা, খাদিমপুর-কামালপুর, খাদিমপুর-জয়দা, কলেজ-মামনপুর, কলেজ-বাদে খজগীপুর, সহিদপুর-মাধবপুর, মাটিহানী-প্রাইমারি স্কুল, উমরপুরবাজার-হিজলশাহ, কুরুয়াবাজার-নিজ কুরুয়া, বিশ্বরোড থেকে খাপন, দশমাইল-বিশ্বনাথ, দয়ামীর-কলেজ, সরিসপুর পয়েন্ট-সরিসপুর, দয়ামীর মাদ্রাসা-ঘোষগাঁও, দয়ামীরবাজার থেকে ঘোষগাঁও খন্দকারবাজার, পারকুল মাজপাড়া-সরিসপুর, খন্দকারবাজার-হুসন নমকি-জালাজপুর, সোয়ারগাও-ধিরারাই, ধিরারাই উত্তরপার-বিশ্বনাথ, বেগমপুর-কালনীচর, খসরুপুর-শেরপুর-বালাগঞ্জ, শাহ তাজউদ্দিনের মাজার সড়ক, গজিজা-ইব্রাহিমপুর- সুন্দিকলা, হলিমপুর-জামতলাবাজার, তালেরতল-খাশিপাড়া, তাজপুর-মঙ্গলচন্ডিবাজার, তাজপুর-ভাড়েরা সড়ক সহ এলজিইডির অর্ধশতাধিক পাকা সড়কের ৮০ কিলোমিটার ভাঙ্গাচুড়া আর বেহাল দশায় রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
উমরপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া, সাদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি সাহেদ আমদ মুছা ও দয়ামীর ইউপি চেয়ারম্যান এসটিএম ফখর উদ্দিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে গত বন্যায় এলজিইডির অনেক পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গাচুরা রাস্তার সংস্কার কাজ করা হয়নি এতে এলাকার মানুষজন রাস্তা দিয়ে চলাচলে চরম দুর্ভোগে আছেন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করছি যতদ্রুত সম্ভব রাস্তা গুলো সংস্কার করে মানুষের দুর্ভোগ লাগব করুণ।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত বন্যায় ওসমানীনগরে অর্ধশতাধিক পাকা সড়কের ৮০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার একটি প্রজেক্ট আমাদের হাতে আসলেও শুধুমাত্র উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক ছাড়া এ প্রকল্পে অন্য রাস্তা সংকার করা যাচ্ছেনা। এই প্রকল্পের আওতায় ২৫টি রাস্তার সংস্কারকাজের টেন্ডার ও ওয়ার্ক ওর্ডার প্রক্রিয়াধিন আছে। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সহ উপজেলার অন্যান্য সড়ক পাকাকরণে লক্ষে এই আসনের সংসদ সদস্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী মহোদয় ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রচেষ্ঠা ও সহযোগীতায় ওসমানীনগরের রাস্তা গুলো পাকাকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও সিলেট-২ আসনের এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ওসমানীনগর ও বিশ্বনাথের সকল রাস্তা পাকাকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ইতিমধ্যে আমি দুই উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী, সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছি। পর্যায়ক্রমে সব গুলো রাস্তার পাকাকরণের ব্যবস্থা কার হবে।