ভোলায় খাল দখল, অনুমতি ছাড়াই ইটের ভাটা নির্মাণ

শরীফ হোসাইন প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারী , ২০২৪ ০৯:১৩ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারী , ২০২৪ ০৯:১৩ এএম
ভোলায় খাল দখল, অনুমতি ছাড়াই ইটের ভাটা নির্মাণ
সরকার যখন নীতিমালার মধ্য দিয়ে ইটভাটাগুলোকে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছেন ঠিক তখন কিছু অসাধু ব্যক্তি জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ইট তৈরী করে দে-ধারছে ব্যবসা করছেন। একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। খাল দখল এবং অনুমতি ছাড়াই ইটের ভাটা নির্মাণ করে ইট পোড়াচ্ছে সিকদার ব্রিকস। ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। সরকার যখন নীতিমালার মধ্য দিয়ে ইটভাটাগুলোকে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছেন ঠিক তখন কিছু অসাধু ব্যক্তি জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ইট তৈরী করে দে-ধারছে ব্যবসা করছেন। একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। খাল দখল এবং অনুমতি ছাড়াই ইটের ভাটা নির্মাণ করে ইট পোড়াচ্ছে সিকদার ব্রিকস। ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

সরকার যখন নীতিমালার মধ্য দিয়ে ইটভাটাগুলোকে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছেন ঠিক তখন কিছু অসাধু ব্যক্তি জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই ইট তৈরী করে দে-ধারছে ব্যবসা করছেন। একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। খাল দখল এবং অনুমতি ছাড়াই ইটের ভাটা নির্মাণ করে ইট পোড়াচ্ছে সিকদার ব্রিকস। ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।



সূত্রে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী বাঘমারা ব্রীজের দক্ষিণ দিকে নুরু মেম্বারের বাড়ীর পিছনে তেঁতুলিয়ার শাখা নদী কালির দোন খাল ভরাট করে সিকদার ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা করেন স্থানীয় মোঃ আলী আকবর। যার দাগ নং-৮৯৪/৮৯৫, মৌজা-লালপুর, দক্ষিণ বালিয়া, দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন, ভোলা। গেল বছরের ডিসেম্বরে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েই শুরু করে খাল দখল ও ইট তৈরী। অথচ জেলা প্রশাসন এখন পর্যন্ত ওই ইটভাটাকে কোন অনুমোদন দেয়নি।
এদিকে একই জায়গায় ২০১৭ সালে বাবা-মায়ের দোয়া নামে একটি ইটভাটা তৈরী করেন স্থানীয় মিঠু মাতাব্বর। কিন্তু বৈধ কাগজপত্র এবং খাল ভরাট করাতে তৎকালীন এডিএম আব্দুল হালিম জরিমানা করে ব্রিকস ফিল্ডটি বন্ধ করে দেন। তার ৬ বছর পর একই জায়গায় একই ভাবে মোঃ আলী আকবর সিকদার ব্রিকস নামে ইটভাটা করেন। এ যেন পুরনো বোতলে নতুন মোড়ক।



এলাকাবাসী জানান, তেঁতুলিয়ার শাখা নদী কালির দোন দিয়ে খেয়াঘাট হয়ে খোরশেদ খা ঘাট, খায়ের হাট, শান্তির হাট, নাছির হাওলাদার ঘাট, ভেলুমিয়া বাজার, ধুলিয়া, কালাইয়া, কবাই হয়ে কালিশ্বর যাতায়াত করা হতো। আমাদের স্থানীয়দের যেমন উপকার হতো, তেমনি হাজার হাজার মানুষেরও উপকার হতো। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, মাছ সম্পদসহ হাজার হাজার লোক এই নদী দিয়ে জীবন-যাত্রা নির্বাহ করতো। খালটি এক সময়ে ছিল ১৮০ফিট। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি খালটিকে ভরাট করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে এবং বর্তমানেও করছে। যার কারণে খালটি এখন মৃত প্রায়। নদীটির শাখা খালটি ভরাট করে ইটভাটা করাতে আমাদের জীবনের চাকা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।স্থানীয় হারুন অর রশিদ জানান, সিকদার ইটভাটার মালিক আলী হোসেন খুব ক্ষমতাবান। কথায় কাথায় তিনি প্রশাসনের ভয় দেখান। সে কতবড় ক্ষমতাবান খাল দখলও করলো, আবার ইটভাটাও করলো। সে আবার বটতলা বালিয়া খালের পাশে শত শত মন লাকড়ি স্টক করে সেখান থেকে রাতের আধারে অল্প অল্প করে লাকড়ি নিয়ে ইটভাটায় পোড়ান।



বিনা অনুমতিতে কিভাবে ইটভাটা তৈরী ও ইট পোড়াচ্ছেন এমন প্রশ্ন করা হলে সিকদার ব্রিসক এর মালিক আলী আকবর বলেন, আমি সকল ঘাট ম্যানেজ করেই করছি। খাল ভরাট করে ইটভাটা নির্মাণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনি যা পারেন তা লিখেন। আপনাদের মত সাংবাদিক হিসাব করার মত আমার সময় নেই। আপনি চেয়ারম্যান-কে জিগান, আমি কি করছি।সিকদার ব্রিসক এর ইটভাটার ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান স্বপন ঢাকায় থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় নুরু মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখানে ৪-৫ বছর আগে একটি ইটভাটা ছিল, তা সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। এখন আবার খাল দখল করে পুনরায় ইটভাটা দিয়েছে। পরিষদে এটা নিয়ে আলাপ হয়েছে, চেয়ারম্যান সাহেব ঢাকা; তিনি দেশে আসলে সিকদার ব্রিকসের মালিককে ডেকে বিয়ষটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া জানান, ৫-৬ বছরের আগের ইটভাটার পরিবেশের অনুমতি-টি-ই সে পুনরায় নবায়ন করেছে। বর্তমানে খাল ভরাট করে নতুন ভাবে ইটভাটা করলো এটা দেখেও আপনি কিভাবে নবায়ন করলেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেন নি।
স্থানীয় প্রশাসন (চেয়ারম্যান) এবং জেলা প্রশাসনের অদক্ষতার কারণেই এসব ইটভাটা অবৈধভাবে ইট তৈরী করেন এবং নদী দখল করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে বলে মন্তব্য করেন ভোলা পরিবেশবাদী আন্দোলনের নেতা মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী।বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ আরিফুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সূত্রে জানা যায়, ভোলা জেলায় ইটভাটা ১১৫টি। যার মধ্যে ৮০টি বৈধ, সিকদার ব্রিকস সহ ৩৫টি অবৈধ। সুপ্রিয় পাঠক অবৈধ ইটভাটা নিয়ে আমাদের অনুসন্ধান চলছে। জেলার প্রত্যেকটি অবৈধ ইটভাটার তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরবো।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo