বিদ্যুতের ভেলকিবাজির লোডশেডিংয়ের কবলে কেরানীগঞ্জ, জনজীবনে অস্বস্তি

মোঃ আঃ রহিম জয় চৌধুরী প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর , ২০২৪ ১১:৩৯ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর , ২০২৪ ১১:৩৯ এএম
বিদ্যুতের ভেলকিবাজির লোডশেডিংয়ের কবলে কেরানীগঞ্জ, জনজীবনে অস্বস্তি
সোমবার ( ১০সেপ্টেম্বর ) কেরানীগঞ্জের আটিবাজার, আরশীনগর, খোলামোরা, জিনজিরা, কালিগঞ্জ, কদমতলী, কোনাখোলা ও হাসনাবাদ ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় প্রায় প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ আসে এবং মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর আবার চলে যায়।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে শুরু হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। যার ফলে এই তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। ভোর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত অবদি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এ মহড়া চলছে। প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়ার মধ্যেই আছে বিদ্যুৎ।

সোমবার ( ১০সেপ্টেম্বর ) কেরানীগঞ্জের আটিবাজার, আরশীনগর, খোলামোরা, জিনজিরা, কালিগঞ্জ, কদমতলী, কোনাখোলা ও হাসনাবাদ ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় প্রায় প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ আসে এবং মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর আবার চলে যায়।

আরশিনগর এলাকার বাসিন্দা মো. এনামুল হোসেন জানান, সারাদিন অফিসে কাজ করে রাতে ঘুমানোর সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে তীব্র গরমে ঘুম আসে না। যার ফলে পরদিন অফিসে গিয়ে কাজে মনোযোগ দেওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। এ ছাড়াও আমার বাসায় ছোট বাচ্চা গরমে সারারাত ঘুমাতে পারে না। দ্রুত এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।

কালিগঞ্জের গার্মেন্টস মালিক সমিতির সচিব সাইফুল ইসলাম জানান, বিদ্যুৎ ঠিকমতো না থাকায় গার্মেন্টসগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারছে না। এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ, তার ওপর বিদ্যুৎ বিভ্রাট মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে কাজ করছে। সামনে শীতের মওসুম শুরু হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে শীতের কাপড়ের সঙ্গে জড়িত গার্মেন্টসগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

সাইফুল ইসলাম আরও জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে উৎপাদন খরচ বাড়ছে এবং সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করতে পারলে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গার্মেন্টস মালিকরা জানিয়েছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে কাজ বন্ধ থাকলেও শ্রমিকদের বেতন দিতে হচ্ছে, যা তাদের ওপর আর্থিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

কেরানীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর জেনারেল ম্যানেজার জুলফিকার বলেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলায় আগে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর এলাকা হওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত এলাকা ছিল। সারা দেশে বিদ্যুৎ সমস্যা থাকলেও কেরানীগঞ্জে বিশেষ লোডশেডিং হতো না। এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে কেরানীগঞ্জে ৩০-৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি, কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারসহ গার্মেন্টস পল্লী থাকায় যেন আগের মতো নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। সারা দেশে কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কেরানীগঞ্জসহ সারা দেশেই লোডশেডিং বেড়েছে। কেরানীগঞ্জে বিদ্যুতের চাহিদা অত্যন্ত বেশি, কারণ এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক এবং বড় বড় শিল্প কারখানা রয়েছে।

আমরা যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি, তা অনুযায়ী প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছি। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।কেরানীগঞ্জের মতো শিল্পসমৃদ্ধ এলাকায় দীর্ঘ সময় লোডশেডিংয়ের প্রভাব আরও গুরুতর হলে ও দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে সাধারণ মানুষ এবং শিল্প খাত উভয়ই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo