বরগুনার তালতলীর সোনাকাটা ইকোপার্কটির বেহালদশা

কাওসার হামিদ প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর , ২০২৪ ১৬:৫১ আপডেট: ৬ নভেম্বর , ২০২৪ ১৬:৫১ পিএম
বরগুনার তালতলীর সোনাকাটা ইকোপার্কটির বেহালদশা
রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে বরগুনার তালতলীর সোনাকাটা ইকোপার্কটির বেহাল। দর্শনার্থীদের চলাচলের ১৬টি কাঠের সেতুর ১০টি ব্যবহারের অনুপযোগী।

রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে বরগুনার তালতলীর সোনাকাটা ইকোপার্কটির বেহাল। দর্শনার্থীদের চলাচলের ১৬টি কাঠের সেতুর ১০টি ব্যবহারের অনুপযোগী। সড়কের হেরিংবোনে ইট, বিশুদ্ধ পানির জন্য স্থাপিত নলকূপ, শৌচাগারের দরজা-জানালা ও বেসিন ভেঙে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।  ফলে এগুলো এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় দর্শনার্থীদের আগমন কমে গেছে পার্কটিতে।তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ বৃদ্ধি শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় সুন্দরবনের পর টেংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সকিনা বিটে ২০১০-২০১১ ও ২০১১-১২ অর্থবছরে ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সোনাকাটা ইকোপার্ক নামে এই পার্কটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৩ হাজার ৬৩৪ একর জমির ওপর উপকূলীয় এই বনাঞ্চল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে চোখে পড়ার মতো কোনো  সংস্কার করা হয়নি।বন বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, বনের ভেতরে বিভিন্ন প্রাণী সংরক্ষণের জন্য ইটের প্রাচীর ও লোহার গ্রিল দিয়ে সীমানা প্রাচীর তৈরি করা হয়। প্রাচীরের ভেতরে চিতা বাঘ, হরিণ, শূকর, অজগর, কুমির, বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়। এ ছাড়া পর্যটকদের জন্য বনভোজনের স্থান, চলাচলের জন্য বনের ভেতরে ছোট ছোট খালের ওপর ১৬টি কাঠের সেতু, চারটি গভীর নলকূপ, চারটি শৌচাগার, চারটি বিশ্রামাগারসহ ইটের সাড়ে চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক নির্মাণ করা হয়। ইকোপার্কটি নির্মাণের পর এসব অবকাঠামো দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে কিছুদিনের মধ্যেই পার্কটি বেহাল হয়ে পড়ে।সরেজমিন দেখা গেছে, বনের ভেতরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপিত দুইটি গভীর নলকূপগুলো অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া দর্শনার্থীদের ব্যবহারের জন্য নির্মিত তিনটি শৌচাগার ভেঙে গেছে। বনের ভেতরে দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য সকিনা খাল থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহনা পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হলেও এই সড়কের ইট উঠে গেছে। সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী। বন্য প্রাণীদের থাকার স্থানের চারপাশে নির্মিত লোহার গ্রিলে মরিচা ধরে অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে। দেয়ালের পলেস্তারাও খসে পড়েছে। ইকোপার্কের কুমির প্রজননকেন্দ্রেরও করুণ অবস্থা।পার্কে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, ইকোপার্কের অভ্যন্তরীণ অবস্থা খুব নাজুক। দর্শনার্থীদের জন্য নির্মিত সেতু ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ভেতরের রাস্তাও খারাপ। দর্শনার্থীদের ব্যবহারের জন্য নির্মিত নলকূপ, শৌচাগার ভেঙে যাওয়ায় ব্যবহারের জন্য একেবারে অনুপযোগী। সুন্দর পরিবেশে পার্ক নির্মাণ হলেও বেহাল অবস্থার কারণে এখানে কেউ আসতে চাইবে না।মাসুম বিল্লাহ্ নামের পর্যটক বলেন, পার্কটির ভেতরের পরিবেশ খারাপ হয়ে যাওয়ায় এবং সড়কের সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক কমে। এ ছাড়া ইকোপার্কটির অবস্থা খুব বেহাল, এখানে বন্য প্রাণীদের জন্য নির্মিত বেষ্টনী নি¤œমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই পার্কে আসতে হলে একটি বড় খাল ছোট খেয়া নৌকায় পার হতে হয়। এতে ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণেই এই পার্কে পর্যটকদের সংখ্যা কমছে।টেংরাগিরি ইকোপার্কের দায়িত্ব থাকা সখিনা বিটের বিট কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন কে একাধিকার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেনি।তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন,আমি নতুন এসেছি। এখনো ঐ পার্কে যেতে পারিনি। দ্রুত পার্কটি পরিদর্শন করে মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। যাতে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করে পর্যটনমুখি করা যায় পার্কটি।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo