ফরিদপুরে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবীতে বিদ্যুৎ শ্রমিকদের বিক্ষোভ, অনির্দিষ্টকালের কর্ম বিরতি

এ এস এম জুনায়েদ প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর , ২০২৪ ১৬:৫৫ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর , ২০২৪ ১৬:৫৫ পিএম
ফরিদপুরে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবীতে বিদ্যুৎ  শ্রমিকদের বিক্ষোভ, অনির্দিষ্টকালের কর্ম বিরতি
উক্ত কাজের বিপরীতে আমরা জনপ্রতি ক্ষেত্রবিশেষ ৩০০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা মাসিক পারিশ্রমিক পেয়ে থাকি। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই পারিশ্রমিকে আমরা পরিবার নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি।বর্তমানে ওজোপাডিকো'র মোট গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ। কিন্তু এর বিপরীতে গ্রাহক সেবা দেয়ার কর্মচারী আছে ৪৮০-৫০০ জন মাত্র। অর্থাৎ প্রতি ৩৩০০ জন গ্রাহকের বিপরীতে একজন শ্রমিক সেবা প্রধানের দায়িত্ব রয়েছে।

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ওয়েস্ট জন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী (ওজোপাডিকো) ফরিদপুরে কর্মরত শ্রমিকেরা।

আজ ২২ সেপ্টেম্বর (রবিবার) সকাল ১১ টায় ওয়েস্টজন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ফরিদপুর সার্কেলের শ্রমিকেরা শহরের গোয়ালচামটস্থ বিদ্যুৎ অফিস প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ওজোপাডিকো পিচরেট শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ফরিদপুর সার্কেলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহিন মোল্লা বলেন,আমরা শ্রমিকেরা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড তথা বর্তমানে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে বিগত ২০-২৫ বছর যাবৎ নিরবিচ্ছিন্নভাবে কর্মরত থেকে গ্রাহক সেবার যাবতীয় কাজ সততার সাথে পালন করে আসছি।নির্ধারিত কাজের বিপরীতে মিটার রিডিং গ্রহণে জেলা পর্যায়ে প্রতিটি ৩.০০ টাকা,থানা পর্যায়ে ৩.৫০ টাকা,বিল প্রস্তুত জেলা পর্যায়ে প্রতিটি ১.৫০ টাকা,ক্রেডিট পোস্টিং গ্রাহক পর্যায়ে প্রতিটি ১.৪০ টাকা,এবং বিল বিতরণ জেলা পর্যায়ে প্রতিটি ২.২৫ টাকা,ও থানা পর্যায়ে ৩.০০ টাকা হারে আমাদেরকে মজুরি প্রদান করা হয়ে থাকে।

উক্ত কাজের বিপরীতে আমরা জনপ্রতি ক্ষেত্রবিশেষ ৩০০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা মাসিক  পারিশ্রমিক পেয়ে থাকি। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সামাজিক প্রেক্ষাপটে এই পারিশ্রমিকে আমরা পরিবার নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি।বর্তমানে ওজোপাডিকো'র মোট গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৬ লক্ষ। কিন্তু এর বিপরীতে গ্রাহক সেবা দেয়ার কর্মচারী আছে ৪৮০-৫০০ জন মাত্র। অর্থাৎ প্রতি ৩৩০০ জন গ্রাহকের বিপরীতে একজন শ্রমিক সেবা প্রধানের দায়িত্ব রয়েছে।

ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ- এই ৫ জেলায় অর্থাৎ ফরিদপুর সার্কেলে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৫৭ হাজার জন। কারিগরি শ্রমিক রয়েছে ৭৭-৮০ জন।কোম্পানির গ্রাহক সংখ্যার আনুপাতিক হারে কারিগরি সহায়তা এর জনবল প্রয়োজন প্রায় ৪০ হাজার জন। কিন্তু কেবলমাত্র ৪৮০-৫০০ জন শ্রমিক এ দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন শ্রমিকেরা উপর্যপুরী পরিশ্রম করছে কিন্তু তুলনামূলক ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছে না, অন্যদিকে গ্রাহকগণ প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

উল্লেখ্য ১৯৮৪ সালের ১২-ই নভেম্বর পিচরেট শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বিগত ২৪/৫/২০১১ তারিখ হতে ১৯/৫/২০২৪ তারিখ পর্যন্ত অসংখ্যবার পিচরেট শ্রমিকদের বয়স সীমা শিথিল করে কোম্পানিতে বিদ্যমান শূন্য পদের বিপরীতে চাকুরী স্থায়ীকরণ এর দাবিতে আবেদন করলেও আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি।শ্রমিকদের বয়সসীমার শিথিল করে শূন্য পদের বিপরীতে চাকুরী স্থায়ীকরণের মাধ্যেম বৈষম্য দূরীকরণের আবেদন জানিয়ে তারা নির্বাহী প্রকৌশলী ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরিদপুর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং দাবি পূরণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।এ সময় বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ওজোপাডিকো পিচরেট শ্রমিক কল্যান সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী জামান হোসেন। ওজোপাডিকো পিচরেট শ্রমিক কল্যাণ সমিতি ফরিদপুর সার্কেল এর সভাপতি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন খান সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শ্রমিক বৃন্দ। 


এই বিভাগের আরোও খবর

Logo