প্রবাস প্রেরত ময়রুনের মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলায় সর্বশান্ত হওয়ার অভিযোগ।

জায়েদ আহমেদ প্রকাশিত: ৪ মার্চ , ২০২৫ ১৭:৩৪ আপডেট: ৪ মার্চ , ২০২৫ ১৭:৩৪ পিএম
প্রবাস প্রেরত ময়রুনের মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলায় সর্বশান্ত হওয়ার অভিযোগ।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার নছরতপুর গ্রামের প্রবাস ফেরৎ শাহনাজ বেগম ময়রুন মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলা দিয়ে মানসিক ও আর্থিক ভাবে হয়রানী করেছেন বলে প্রাক্তন স্বামী সিরাজ মিয়া অভিযোগ করেছেন

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার নছরতপুর গ্রামের প্রবাস ফেরৎ শাহনাজ বেগম ময়রুন মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলা দিয়ে মানসিক ও আর্থিক ভাবে হয়রানী করেছেন বলে প্রাক্তন স্বামী সিরাজ মিয়া অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার নছরতপুর গ্রামের মৃত ছিপত উল্ল্যার মেয়ে শাহনাজ বেগম ময়রুনের ১ম বিয়ে হয় মো. ছমির মিয়ার সাথে। ছমির মিয়ার ঔরসে ছেলে সামছু মিয়া ২ মেয়ে মোছা. নাহার বেগম ও মোছা. মুন্নি বেগম নামীয় ৩ সন্তান ছিলো। ছমির ও ময়রুনের মধ্যে বনিবনা না হলে দু’জনের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। 
বিবাহ বিচ্ছেদের পরপরই মৌলভীবাজার থানার বর্ষিজোড়া গ্রামের মো. জাফর মিয়ার ছেলে মো. আনকার মিয়ার সাথে ২য় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। 
এদিকে বহু বিবাহকারী ময়রুন গত ২১/৮/২০০৬ সালে ২য় স্বামী আনকার মিয়াকে এফিডেভিটের মাধ্যমে তালাক প্রদান করেন। তারপর ২৭/১১/২০০৬ সালে খুশালপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার সাথে পুণরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তখন সুচতুর ময়রুন বেগম পূর্বের স্বামী মো. ছমির মিয়ার ঔরসের মেয়ে মোছা. মুন্নী বেগমের জন্ম নিবন্ধনে পিতার নামের স্থানে সিরাজ মিয়া লিপিবদ্ধ করেন এবং জন্ম তারিখ উল্লেখ করেন ১১/৫/১১৯৯ইং অথচ ময়রুনের সাথে আমার বিবাহ হয় ২৭/১১/২০০৬ সালে। 
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, তার সাথে আমার বিবাহ হওয়ার পর আমার অনুমতি না নিয়েই প্রবাসে ৩বার গমন করেন এবং উপার্জিত অর্থ পিত্রালয়ে প্রেরন করেন। এনিয়ে আমাদের মধ্যে মনের অমিল দেখা দেয়। এমতাবস্থায় ২০১৮ সালে ময়রুন প্রবাস থেকে দেশে আসলে আমার সাথে বসবাস করতে রাজি না হওয়ায় তৎকালীন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমুজ মিয়ার নিকট বিচার প্রার্থী হলে বিচারের দিন ময়রুন উপস্থিত না হওয়ায় ১৬/৭/২০১৯ সালে মৌলভীবাজার নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ময়রুনের নিকট তালাকনামা প্রেরণ করি। 
এরপর থেকে ময়রুন দেশে ও প্রবাসে থেকে বিভিন্ন সময় মিথ্যা-ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করে মামলা-মোকদ্দমা করে আর্থিক ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ করে তুলেছেন। 
তিনি আরো বলেন, ময়রুন বেগম আমার নিকট জমি কেনা,বাড়ী ঘর নিমার্ণ বাবত ৪ লাখ পায় মর্মে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩নং আমল আদালত মৌলভীবাজারে পি:২২৯/২০১৯ দায়ের করেন। তদন্ত শেষে মামলাটি সি/আর ৪৫/২০২০ইং হিসাবে অন্তভূক্ত হয়। বিবাদী আবারো প্রবাসে চলে গেলে তার ভাবি মোছা. সেলিনা বেগমকে আমমোক্তার নামা মূলে পাওয়ার অব এ্যাটনী দিয়ে মামলা পরিচালনা করে আমাকে হয়রানী করতে থাকেন। পরবর্তীতে স্থানীয় শালীসানদের মাধ্যমে শালীসে উভয়পক্ষ সম্মত হলে ৩১/৩/২০২১ সালে আপোষনামা বিষয়টি মীমাংসা হয়। 
তিনি আরো বলেন, মামলাবাজ চতুর ময়রুন লেনদেন সংক্রান্ত সি/আর ২২৯/২০২৯ মামলায় ঘটনার তারিখ উল্লেখ করেছেন ৩/১১/২০২৯ ইং ২য় ঘটনা ২০/৭/২০১৯ ইং যাহা শালীসে নিস্পত্তি হয়েছে। ময়রুন নিস্পত্তি হওয়া ঘটনাকে একই লেনদেন ও বর্ণনায় শুধু মাত্র তারিখ ও সাল পরিবর্তন করে পুনরায় অর্থাৎ তারিখ ১৮/১২/২০২৪ ইং ও ২৫/১২/২০২৪ ইং এবং শালীসনামা জাল করে আবারো সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩নং আমল আদালত মৌলভীবাজারে সি/আর মামলা নং ১৩/২০২৫ ইং (কমল)দায়ের করেন। 
ময়রুনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলায় আর্থিক ও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। এই হয়রানী থেকে পরিত্রান পেতে আদালতের সদয় দৃষ্টি ও ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি। 
ময়রুনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি সরল বিশ্বাসে তার (সিরাজ) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমাকে তার বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে নানা বাহানায় বাবার বাড়ীতে রেখে দিতো। প্রবাসে গিয়ে উপার্জিত অর্থ তার কাছে পাঠাতাম। তার জমি বিক্রি করার কথা বললে আমি জমি ক্রয় বাবত আড়াই লাখ টাকা দেই। তবে জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয়নি। 
তিনি আরো বলেন,আমার টাকা দিয়ে তাকে (সিরাজকে)বিদেশ নিয়েছিলাম। সেখানে তাকতে পারেনি। পরে দেশে চলে আসে। আমার টাকা দিয়ে তার বাড়ীতে ঘর নির্মান ও নলকূপ স্থাপন করেছি। জমি রেজিষ্ট্রি করে দেয়ার কথা বলায় সে ও তার আত্নীয়রা আমাকে মারদর করতো তাই আমি বাবার বাড়ী চলে আসি।
এদিকে, ময়রুনের দায়েরকৃত মামলার তার দেয়া মানীত স্বাক্ষী খুশালপুর গ্রামের মৃত ঠাকুর মিয়ার ছেলে কয়ছর মিয়ার সাথে আলাপ করলে বলেন, সিরাজ ও ময়রুনের বিবাহ হয়েছি শুনেছি। এরপর তাদের লেনদেন এবং মামলার বিষয় আমি জানি না। আমার অজান্তেই আমাকে মামলার স্বাক্ষী দেওয়া হয়েছে।
অপর স্বাক্ষী খুশালপুর গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে তোতা মিয়া বলেন, তাদের মধ্যে বিবাহ হয়েছে শুনেছি। তবে মহিলাকে সিরাজের বাড়ীতে কখনো দেখিনি। শুনেছি মহিলা খুবই খারাপ প্রকৃতির, আমাকে মামলার স্বাক্ষী দিয়েছে ঠিক কিন্তু আমি কোন কিছুই জানি না।
মামলা তদন্তকারী অফিসার রাজকান্দি বন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা বিপ্লব বড়ুয়ার সাথে আলাপ করলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিয়েছি। আদালত বাকি কাজ করবেন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo