প্রবল বর্ষন ও স্রোতে হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ

জাবেদ হোসাইন প্রকাশিত: ৩১ মে , ২০২৫ ১৫:২৩ আপডেট: ৩১ মে , ২০২৫ ১৫:২৩ পিএম
প্রবল বর্ষন ও স্রোতে হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ


দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউসসহ কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম ছেড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীতে নৌকা ও বাঁশের ভেলার উপর দাঁড়িয়ে জাল ফেলছিলেন এবং বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের অপেক্ষায় ছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হলে মা মাছ রাত দেড়টার দিকে ডিম ছাড়া শুরু করে। গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত শত শত নৌকা নিয়ে ডিম সংগ্রহকারীদের উৎসবমুখর পরিবেশে নদীতে জাল ফেলতে দেখা যায়। হাটহাজারী-রাউজান উপজেলার আজিমের ঘাট, কুমারখালী, নাপিতের ঘাটা, পুরালিয়া স্লুইসগেট, মাছুয়াঘোনাসহ হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা মাছ ডিম ছেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা।
এ বিষয়ে হালদা গবেষক ড. শফিকুল ইসলাম জানান, সাধারণত প্রতি বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে জুন পর্যন্ত অমাবস্যার জো-তে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি আসলে নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। দুই-তিন দিন আগে মা মাছ কিছু নমুনা ডিম ছাড়লেও বৃহস্পতিবার রাতে পুরোদমে ডিম ছেড়েছে।
ডিম সংগ্রহকারী মো. শাইফুল আলম বলেন, “গভীর রাত থেকেই আমরা নৌকায় বসে ডিম সংগ্রহ শুরু করেছি। হালদার মা মাছের ডিম প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশে নদীর পানি থেকে সরাসরি ডিম সংগ্রহ করে তা কুয়ায় নিয়ে রেণুতে পরিণত করবে।”
স্থানীয়রা বলেন, হালদা নদীর এ উৎসব শুধু মাছের প্রজননেই সহায়ক নয়, বরং এলাকার মানুষের ঐতিহ্য ও জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ বহন করে। তারা নদী রক্ষার বিষয়ে আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়ার তাগিদ দেন।
হালদা নদীতে প্রতিবছর ডিম ছাড়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে মাছের নতুন প্রজন্ম জন্ম নেয়। এতে স্থানীয় মাছের বৈচিত্র্য ও উৎপাদন বাড়ে। পাশাপাশি ডিম সংগ্রহের সময় নদীর পানি দূষণ ও দখলদারদের বিরুদ্ধে নজরদারি জোরদার করা হয়। নদীর বাস্তুতন্ত্র অক্ষুণ্ণ রাখতে বিশেষভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo