দক্ষিণ উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় টানা তিন দিনের অবিরাম বর্ষণে নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ জনজীবন। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। একদিকে বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়া সড়ক, অন্যদিকে কাজ না থাকায় খাবার জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন হাজারো দিনমজুর ও শ্রমজীবী পরিবার।
ভোলা, বরগুনা ও পটুয়াখালীর মতো বাউফলেও একই দৃশ্য—চারদিকে কাদা-পানি, চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তা। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা ভিজে কাঁদায় একাকার। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
ভেজা জামাকাপড়, নষ্ট হয়ে যাওয়া বই-খাতা ও ব্যাগ—সবকিছু মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মানসিক চাপ। অনেক শিক্ষার্থী বৃষ্টির কারণে স্কুলে উপস্থিত হতে পারছে না, আবার যারা আসছে, তারা দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই বাউফলের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস জ্বর। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে সর্দি-কাশি, জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ বেড়েছে।
নিম্ন আয়ের মানুষদের অনেকে বলছেন, "এই বৃষ্টিতে ঘরেই বসে থাকতে হয়, আবার অসুস্থ হলেও চিকিৎসা নিতে পারি না—এ যেন গোদের উপর বিষফোড়া!"
স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন, এই দুর্যোগের আলামত কি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, শিক্ষা বিভাগ বা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আগে থেকে বুঝতে পারেনি?
বর্ষা এলেই এমন দুর্ভোগ নতুন নয়, তবুও কার্যকর প্রস্তুতির ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে বছরের পর বছর।
বাউফলবাসী এখন চায় দ্রুত রাস্তাঘাট সংস্কার, জলাবদ্ধতা নিরসন, ওষুধ সরবরাহ এবং শিশুদের জন্য বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থার উদ্যোগ। নইলে শুধু বর্ষা নয়, এই অব্যবস্থাপনাই হয়ে উঠবে বড় বিপর্যয়ের কারণ।