দিনাজপুর চিরিরবন্দরে নববধূ তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার দ্রুত বিচার এবং ওসির অপসারণের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও এক মানববন্ধন করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। বুধবার বেলা ১১টায় দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের আমবাড়ি হাটে দেড় ঘন্টাব্যাপি এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। নববধূ তানিয়া আক্তারের স্বামী আব্দুর রহিম ও স্বামীর দুই দুলাভাই বাসর রাতেই ধর্ষণের পর গলাটিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরই প্রতিবাদে আমবাড়িহাটে মহাসড়ক অবরোধ করে কয়েক হাজার বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। এ সময় মহাসড়কে কোন প্রকার যান চলাচল করেনি। ফলে মহাসড়কের দুইদিকে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। মানববন্ধনে রেনেসা বিদ্যালয়ের পরিচালক আজিজার রহমান, তানিয়ার চাচাতো ভাই সুজন মিঞা, প্রতিবেশী শাহীন ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। আন্দোলনে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা অংশগ্রহণ করেন। নিহত তানিয়ার চাচাতো ভাই হামিদুল মোল্লা বলেন, বাসর রাতেই তানিয়াকে যৌন উত্তেজনাকর ওষুধ সেবন করে স্বামী আব্দুর রহিম ও তার দুই ভগ্নিপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও শামসুল ইসলাম তিনজন মিলে নববধূকে গণধর্ষণ করে। একপর্যায়ে নববধূ তানিয়া বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দিলে তানিয়াকে ওই তিনজন মিলে হত্যা করে। এ ঘটনায় চিরিরবন্দর থানা পুলিশ শুধু তানিয়ার স্বামী আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় তানিয়ার পিতা আবু তালেব তিনজনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দায়ের করলেও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ কৌশলে মঞ্জুরুল ইসলাম ও শামসুল ইসলামের নাম বাদ দেন। এনিয়ে গ্রামবাসী বিক্ষুদ্ধ হয়ে ধর্ষকদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার ও আইনের আওতায় নেয়ার ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদকে অপসারণের দাবিতে এ রাস্তা অবরোধ করেন। দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাকিমপুর সার্কেল) নিয়ামত উল্লাহ বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতার সঙ্গে একাততা ঘোষণা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপর ২ আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদকে অপসারণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা আন্দোলন স্থগিত করেন। উল্লখ্য যে, চিরিরবন্দর উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নের হযরতপুর মালাইপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে মো. আব্দুর রহিমের (২৩) সঙ্গে পার্বতীপুর উপজেলার কুড়িয়াইল গ্রামের আবু তালেবের মেয়ে তানিয়া আক্তারের (১৮) পারিবারিকভাবে গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর গত ৮ মার্চ শনিবার স্বামী আব্দুর রহিম তার স্ত্রী তানিয়াকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। রাতের খাওয়া শেষে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা যে যার ঘরে শুয়ে পড়েন। নববধূ তানিয়া ও তার স্বামী তাদের ঘরে শুয়ে পড়েন। গত ৯ মার্চ রবিবার দিবাগত রাত ২টা হতে আড়াইটার মধ্যে নিজ শয়নকক্ষে আব্দুর রহিম তানিয়াকে গলাটিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরেরদিন সকালে তানিয়ার বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।