কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলী মাঠে দেদারসে চলছে অবৈধ ড্রেজার। অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলনের মাধ্যমে কৃষি জমি বিলীন করে যাচ্ছে। যে জমিতে ড্রেজিং করা হয়, তার আশে—পাশের কৃষি আবাদি জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু অসাধু এসব ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রছায়ায় থেকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের কারণে সাধারণ কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ফসলী মাঠে দেদারসে চলছে অবৈধ ড্রেজার। অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলনের মাধ্যমে কৃষি জমি বিলীন করে যাচ্ছে। যে জমিতে ড্রেজিং করা হয়, তার আশে—পাশের কৃষি আবাদি জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিন্তু অসাধু এসব ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রছায়ায় থেকে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের কারণে সাধারণ কৃষকরা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় বর্তমানে ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। প্রতি বছর ১০শতাংশ কৃষি জমি অবৈধ ড্রেজিং সহ বিভিন্ন কারণে কমে যাচ্ছে। এতে খাদ্য—শস্য ও ফসল উৎপাদনও আনুপাতিক হারে কমছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক অভিযোগ করেন— ‘ঢাকা—চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন মীরগঞ্জ রাস্তার মাথায়, মৎস্য হ্যাচারী সংলগ্ন দেলোয়ার ড্রাইভারের বাড়ির পাশে, মুরাদপুর ব্রিকস ফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা ৩টি ড্রেজার চালিয়ে যাচ্ছে। দিনে—রাতে মাটি উত্তোলন হচ্ছে। তাদের জমিগুলো এসব ড্রেজারের পাশে হওয়ায় সেগুলোও ক্ষতির সম্মুখীন।’ স্থানীয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে তারা এসময় অভিযোগ করেন।
অপরদিকে উপজেলার কলাগাঁও এলাকায় ড্রেজার স্থাপন করে মাধাইয়া—নবাবপুর রোডে নোয়াপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মাটি ভরাট কাজ চলছে। কাশিমপুর এলাকায় ড্রেজার স্থাপন করে বাতাবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় জমি ভরাট কাজ চলতে দেখা গেছে। সরেজমিনে উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের মীরগঞ্জ ও নাওতলা এলাকায় ফসলী মাঠ ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ড্রেজার ব্যবসায়ীরা বিএনপি ও এলডিপি’র নেতাকমীর্দের সাথে আঁতাত করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাটি উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দলের নেতা—কর্মীরা। এবিষয়ে উপজেলা প্রশাসন নিরব থাকায় প্রভাবশালী বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভয়ে কথা বলতে পারছেনা ভুক্তভোগী সহ স্থানীয় কৃষকরা।
জানা গেছে, অন্তর্বতীর্কালীন সরকার গঠনের আগে তৎকালীন উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ মাটি—বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন ভেঙে দেওয়াসহ জড়িতদের অর্থদণ্ডের পাশাপাশি কারাদণ্ড ও প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা প্রশাসনের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল অবৈধ ড্রেজিং। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে চান্দিনা উপজেলার শুহিলপুর, বাতাঘাসী, মহিচাইল ও গল্লাই ইউনিয়নের কৃষি মাঠের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে অন্তত আরও ২০—২৫ টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি—বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে।
এব্যাপারে উপ—সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, চান্দিনায় ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। আগামী বছর ১শত ৩১ হেক্টর কৃষি জমি হ্রাস পাওয়ার ঝঁুকি রয়েছে। অবৈধ মাটি উত্তোলন, মৎস্য প্রকল্প তৈরী, বাড়ি—ঘর ও রাস্তা নির্মাণের কারণে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। এব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজিয়া হোসেন বলেন— ‘আমি এবং সহকারী কমিশনার পৃথক অভিযান করেছি। অভিযোগ পেলেই আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান করে এসব ড্রেজার ধ্বংস করা সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।