দুটি পৃথক মামলায় মা-ছেলে সহ তিন জনের যাবজ্জীবন

মোঃমারুফ আলী প্রকাশিত: ৬ নভেম্বর , ২০২৩ ১০:৩১ আপডেট: ৬ নভেম্বর , ২০২৩ ১০:৩১ এএম
দুটি পৃথক মামলায় মা-ছেলে সহ তিন জনের যাবজ্জীবন
নাটোরে দুটি পৃথক মামলায় মা ও ছেলে সহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন একই আদালত। রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুরে নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম পৃথক এই দুটি মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। রায়ে তিনজনকেই ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

নাটোরে দুটি পৃথক মামলায় মা ও ছেলে সহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন একই আদালত। রোববার (৫ নভেম্বর) দুপুরে নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম পৃথক এই দুটি মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। রায়ে তিনজনকেই ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া কালাইকুড়ি গ্রামের শচিন চন্দ্র মহন্তের স্ত্রী ৬০ বছর বয়সী গীতা রানী মহন্ত ও তার ছেলে ৪০ বছর বয়সী দুলাল চন্দ্র মহন্ত এবং অপরজন নাটোর সদর উপজেলার জালালাবাদ টাঙ্গাইলপাড়া গ্রামের মৃত হেলালের ছেলে ৪৫ বছর বয়সী ওয়াজেদ আলী। দন্ডিতদের মধ্যে গীতা রানী মহন্ত এবং তার ছেলে দুলাল চন্দ্র মহন্তকে যৌতুক ও গৃহবধু হত্যা মামলায় আর প্রতিবন্ধি নারীকে জোর পুর্বক ধর্ষনের দায়ে ওয়াজেদ আলীর এই যাবজ্জীবন কারান্ডে দেয়া হয়।

আদালাতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া কালাইকুড়ি গ্রামের শচিন চন্দ্র মহন্তের ছেলে দুলাল চন্দ্র মহন্তের সাথে প্রায় ১১ বছর আগে বগুড়ার নন্দিগ্রাম উপজেলার থালতা গ্রামের তপন মহন্তের মেয়ে গীতা রানী মহন্তের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে গীতার ওপর নির্যাতন করা হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়।

মামলার বাদি ২০১১ সালের ১৪ মার্চ মেয়ে শশুরালয়ে বেড়াতে যান। এদিন রাতে মেয়ের শশুরালয়ে থাকা অবস্থায় জামাতা দুলাল চন্দ্র মহন্ত ও তার মা সহ পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য মেয়েকে ঘরের দরজা বন্ধ করে নির্যাতন করতে থাকে। এসময় মামলার বাদি তপন মহন্ত তার মেয়েকে রক্ষা করতে গেলে তাার ওপরও চড়াও হয়ে তাকেও নির্যাতন করে। তারা গৃহবধুর বাবা তপন মহন্তের কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করে। অপরাগতা জানালে তারা বাদির সামনে তাকে সহ তার মেয়েকে লাথি ও কিল ঘুষি সহ মারপিট করে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। তাদের নির্যাতনে ওই গৃহবধুর মৃত্যু হলে একপর্যায়ে তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে। এঘটনায় তপন মহন্ত বাদি হয়ে সিংড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। স্বাক্ষ্য প্রমান শেষে রোববার মামলার রায়ে বিচারক মা ও ছেলেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন।

অপরদিকে প্রতিবন্ধি ভিকটিম নিজেই বাদি হয়ে ধর্ষন মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়, ২০১২ সালের ১৪ জুন প্রতিদিনের মত বাড়ির পাশের মোহনপুর এলাকায় কোরান শিক্ষা গ্রহন করতে যাওযার সময় ওৎ পেতে থাকা ওয়াজেদ আলী ওই নারীকে জোরপুর্ব ধরে নিয়ে ফসলের ক্ষেতে গিয়ে ধর্ষন করে। এঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদি হয়ে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। স্বাক্ষ প্রমান শেষে একই আদালত অভিযুক্ত ওয়াজেদ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। পিপি আরও জানান, যৌতুক ও হত্যা মামলায় দন্ডিত আসামীদের কাছে থেকে আদায়কৃত জরিমানার টাকা নিহত গৃহবধুর মা-বাব এবং ধর্ষন মামলার জরিমানার টাকা ভিকটিমকে দিতে আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo