পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এরই মধ্যে ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। আজ বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।সভায় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান জানিয়েছেন, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলায় ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং গবাদি পশুর জন্য ১৪টি কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে স্বেচ্ছাসেবক এবং মেডিকেল টিমের কর্মীরা। মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকায় জেলেরা নদীতে অবস্থান করছে না।
আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবদুর রহমান খান স্বাক্ষরিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (৪) বুধবার ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য জানানো হয়েছে।বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-এ পরিণত হয়েছে।
এদিকে পৃথকভাবে ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় প্রস্তুতি লক্ষ্যে সদর উপজেলা কর্তৃক অপর একটি প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল চন্দ্র শীল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ভোলা সদর মডেল থানার ওসি হাসনাইন পারভেজ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাসান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শাহিন মাহমুদ, ২ নং ইলিশা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পরানগঞ্জ এলাকার ভারপ্রাপ্ত এজিএম জাকির হোসেন, ভোলাফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর মোঃ ফারুক হোসাইন, ভেলুমিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মনসুর হেলাল, রাজাপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, কাচিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাজাহান মাস্টার, সিপিপির উপজেলা টিম লিডার আবুল হাসান তসলিম। এ সময় অন্যান্য ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব, এনজিও কর্মী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা ভোলা সদর উপজেলার যে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলগুলো রয়েছে সেই সমস্ত চরের বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড়ের সময় সচেতনতার মাধ্যমে নিরাপদ স্থানে আনার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এছাড়া যেকোনো বিপদ আপদে কন্ট্রোল রুমের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।