খুলনার দিঘলিয়ায় আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও আ'লীগ নেতা জিয়া গাজী গ্রেফতার।

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ৫ মার্চ , ২০২৫ ১৪:০৩ আপডেট: ৫ মার্চ , ২০২৫ ১৪:০৩ পিএম
খুলনার দিঘলিয়ায় আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও আ'লীগ নেতা জিয়া গাজী গ্রেফতার।
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনাটি ইউনিয়নের আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একাধিক মামলার আসামি গাজী জিয়াউর রহমান জিয়া গাজীকে নগরীর শিরোমনি এলাকা থেকে এলাকাবাসী আটক করে যৌথ বাহিনীর হাতে সোপর্দ করেছে।

খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনাটি ইউনিয়নের আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা একাধিক মামলার আসামি গাজী জিয়াউর রহমান জিয়া গাজীকে নগরীর শিরোমনি এলাকা থেকে এলাকাবাসী আটক করে যৌথ বাহিনীর হাতে সোপর্দ করেছে। যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ইউপি চেয়ারম্যানকে আটকের পর থানায় হস্তান্তর করে। গ্ৰেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এইচ এম শাহীন। জিকো হত্যা মামলায় আটকের পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আলোচিত এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের দুস্থদের চাল আত্মসাৎ, হত্যা ,চাঁদাবাজি উপজেলা প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত, পথেরবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের  প্রধান শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত  সহ  বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা , অস্ত্র প্রদর্শন সহ ত্রকাধিক মামলা রয়েছে আলোচিত এই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী  সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পলনের পর  ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজী দীর্ঘ দিন ধরে আত্মগোপনে ছিলো ।  গত বছর ২৯ আগস্ট ফুলতলায় জিকো হত্যা মামলায়  আসামি   জিয়া গাজী । এ মামলায়  এস এম মনিরুল হোসেন বাপ্পী বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় ২৪ সালের ২৯ আগস্ট মামলাটি দায়ের করেন, মামলা নং- ৮ । জিকো হত্যা মামলায় যৌথবাহিনী তাকে নগরীর শিরোমনি এলাকা থেকে আটক করে। এছাড়াও 
২০২২সালের২২অক্টোবর  বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা ফুলতলা শিকিরহাট ঘাট থেকে ট্রলার যোগে খুলনায় বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। নেতা-কর্মীদের নিয়ে ট্রলারগুলো  দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়নের চন্দনীমহল কাটাবন নামক স্থানে পৌঁছালে  আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায়  কাজী আনোয়ার হোসেন বাপ্পী  ২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে দিঘলিয়া থানায়  মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩, ।  
২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের এই চেয়ারম্যান প্রথমবারের মতো ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দুস্থদের মাঝে বরাদ্দের ২৪০ বস্তা চাউল আত্মসাৎ করে এ ঘটনায় তৎকালীন ইউএনও আব্দুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন মামলা নং-৫ । মামলাটি পরবর্তীতে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক তদন্তের ভার পেলেও  শেখ পরিবারের তদবিরে মামলাটি আলোর মুখ দেখেনি।
২০২০ সালে ইউপি চেয়ারম্যানের নামে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই  মামলা দায়ের হলে মামলার বাঁদিকে উপজেলার পথের বাজার উজ্জলের চায়ের দোকানে মারধর করে চেয়ারম্যান জিয়া গাজী।
২০২৩ সালে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনিমহল ইয়াসিন হত্যা মামলার ৪ নং আসামি ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজী।
খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা প্রকৌশলীকে ২০২০ সালের ১৮ মে ইউপি চেয়ারম্যান তার দপ্তরে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও তৎকালীন ইউএনও বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন শেখ পরিবারের তদবিরে। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজী তিনি পথের বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করতে না পেরে লাঞ্ছিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজনীন আক্তারকে । 
আলোচিত এই ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজীর অপরাধের ফিরিস্তি  বেরিয়ে আসছে একেরপর এক। 
জিয়া গাজী গ্রেফতারের খবরে এলাকার সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছে পাশাপাশি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
খুলনার দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এইচ এম শাহিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান জিয়া গাজী দীর্ঘ দিন ধরে আত্মগোপনে ছিলো তাকে ধরতে পুলিশ ও যৌথবাহিনীর  অভিযান চলমান ছিল। অবশেষে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।  তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo