উলিপুরে ব্রিজ পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ

মোঃ রেজাউল ইসলাম প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১১:৫৭ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারী , ২০২৫ ১১:৫৭ এএম
উলিপুরে ব্রিজ পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া ব্রিজ দেড় বছরেও পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ২ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ।

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া ব্রিজ দেড় বছরেও পুনঃনির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে ২ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ। স্থানীয়দের সহায়তায় ভাঙা ব্রিজের পাশ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। নড়বড়ে ওই বাঁশের সাঁকো ওপর দিয়ে প্রতিদিন কোমলমতি শিক্ষার্থী, পথচারী ও যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। ফলে প্রতিদিনই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিনে ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের  কামাল খামার গ্রামের ডারারপাড় মোড়ে দেড় বছর আগে জরাজীর্ণ ব্রিজটি বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যায়। পর স্থানীয় জনগণ নিজস্ব উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে। নড়বড়ে ওই বাঁশের সাঁকো ওপর দিয়ে প্রতিদিন দুর্গাপুর ইউনিয়নের ডারারপাড় এলাকার কামাল খামার, ইসলামপুর, আমবাড়ি, তালেরতল এবং ধরণীবাড়ি ইউনিয়নের জানজায়গীর, মাঝবিল ও বাকারা মধুপুর গ্রামের কয়েকশ যানবাহনসহ হাজারো পথচারী যাতায়াত করে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোটখাটো নানা দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫০ বছর আগে ইসলামপুর গ্রাম থেকে তেঁতুলতলা বাজার সড়কে চতলা বামনি নদীর সংযোগ মুখে প্রায় ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। গত ২০২৩ সালের বন্যায় ব্রিজের তলদেশের মাটি সরে গিয়ে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁশের সাঁক নির্মাণ করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে নড়বড়ে ওই বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে ওপর দিয়ে ধরণীবাড়ি ও দুর্গাপুর ইউনিয়নের আশপাশের প্রায় ১০ গ্রামের মানুষ উপজেলা শহরে আসা-যাওয়া করে। এছাড়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা মিশুক গাড়ি, ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল চলাচল করে। ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ বিপ্লব সরকার বলেন, রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্রিজটি ভেঙে পড়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। সাঁকোর ওপর দিয়ে কামাল খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জানজায়গীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কামাল খামার ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে। পথচারী আকবর আলী, রফিকুল ইসলাম, মকবুল হোসেন, আব্দুল বারী, আব্দুল ওহাব জানান, এ রাস্তাটি গ্রামের হলেও প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের শতশত গাড়ি যাতায়াত করে। আর প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যানবাহন চলতে অসুবিধা হচ্ছে। বৃষ্টির সময় আরো বেশি অসুবিধা হয়। কামাল খামার তেঁতুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশা খাতুন ও শামীম মিয়া জানায়, ব্রিজ না থাকায় বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে স্কুল যেতে আমাদের খুব ভয় লাগে। গাড়িঘোড়া আসলে আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। তবুও কষ্ট করে স্কুলে যেতে হয়। তাদের দাবি দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার। কামাল খামার তেতুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, ভাঙা ব্রিজটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। এমনকি অনেক সচেতন অভিভাবক তাদের ছোট বাচ্চাদের মাঝে মাঝে স্কুলে পাঠান না। দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সাঈদ বলেন, ভাঙা ব্রিজটির বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে অবগত করছি। ব্রিজটি অতিদ্রুত নির্মাণ করা উচিত। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষক অবগত আছে। অনুমোদন পেলে যতদ্রুত সম্ভব সেখানে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo