বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফজলুল হক ভূইঁয়া বলেছেন, বাকৃবির প্রয়াস আগামীতে বাংলাদেশের কৃষিকে আরও শক্তিশালী এবং খাদ্য নিরাপত্তায় স্বচ্ছল করবে। আমরা একটি টেকসই এবং খাদ্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার পথে একসাথে কাজ করে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, উদ্ভাবনী গবেষণা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, কৃষক এবং গবেষকরা একযোগে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) তত্ত্বাবধানে তিন দিনব্যাপী ‘গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালার উদ্বোধনীতে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপাচার্য এসব কথা বলেন।
উপাচার্য আরো বলেন, “বাংলাদেশ, তার ভৌগোলিক অবস্থান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে, কৃষির জন্য এক অনিশ্চিত ভবিষ্যত মোকাবিলা করছে। তবে, কৃষি গবেষণা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বাকৃবির একাগ্রতা এবং উদ্ভাবনী শক্তি আমাদের কৃষি ব্যবস্থা আরও টেকসই এবং সহিষ্ণু করে তুলবে।”
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে কর্মশালাটির স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেছেন বাউরেসের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাভিদুল হক ভূঁঞা। এবারের কর্মশালার প্রতিপাদ্য ‘বাংলাদেশে জলবায়ু সহনশীল কৃষিকে উৎসাহিত করা: কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠন’।
বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপদেষ্টা এবং ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এবং কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. নাথুরাম সরকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাকৃবির অনন্য ও সেরা বিষয়টি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষক নারী। কৃষিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতি জরুরি।
তিনি আরোও বলেন, বিশ্ববিদালয়ে গবেষণার পাশাপশি গবেষণার সংস্কৃতিও থাকা দরকার। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে গবেষণার সংস্কৃতি বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে আরোও পরিচিত করে তুলবে।
অনুষ্ঠানে এ বছর শিক্ষকদের এইচ-ইনডেক্স মানের উপর ভিত্তি করে মোট ১৭ জনকে গ্লোবাল রিসার্চ ইম্প্যাক্ট রিকগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও কৃষি উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য খামার পর্যায়ের ৫ জন কৃষককে প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি কৃষি পুরষ্কার-২০২৫ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও এবছর কৃষি বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাকৃবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. রায়হান আবিদকে কৃষি সাংবাদিকতা অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের মধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক পুরষ্কার প্রাপ্তির অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরুপ বাউরেস থেকে পাঁচ জনকে গ্লোবাল সায়েন্টিস্ট রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করা হয়। এছাড়াও ২০২৪ সালে বিশ্ব র্যাংকিংয়ে স্ট্যানফোর্ড-এলসেভিয়ায়ের শীর্ষ ২% বিজ্ঞানীর তালিকায় বাকৃবির ৮ জন শিক্ষককে তাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাউরেস থেকে তাদেরকে সম্মাননা-২০২৫ প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, তিনদিন ব্যাপি অনুষ্ঠানে ২৩টি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপিত হবে এবং তা থেকে পরবর্তী গবেষণার পরিকল্পনা করা হবে। পরবর্তীতে সেশন ভিত্তিক বেস্ট ২১ জন উপস্থাপনকারীকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়াও পোষ্টার সেশন মোট ৬ জনকে সেরা পোস্টার উপস্থাপনকারী হিসেবে পুরুস্কৃত করা হবে।