ফরিদ মিয়া নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইল হাইওয়ে থানার কার্যক্রম প্রায় ২৭ বছর ধরে ভাড়া বাসায় পরিচালিত হচ্ছে। নিজস্ব জায়গায় ভবন নিমার্ণ করে সকল কার্যক্রম চালাতে চায় হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেই ভবনের কাজ অর্ধ অবস্থায় ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা। নির্মাণকাজ শেষ হয়নি গত ছয় বছরেও। ঝোপঝাড়ে ও মাদক বিক্রেতা এবং সেবনকারীর আস্থানার পরিণত হয়েছে নির্মাণাধীন ভবনটি। ২০১৯ সালে গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ হাইওয়ে মহা সড়কের নান্দাইল চৌরাস্তা সংলগ্ন বারুইগ্রাম এলাকায় নান্দাইল হাইওয়ে থানা ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে। চারতলা বিশিষ্ট থানা ভবনটির তিন তলার ছাদ ঢালাই শেষ হয়েছে। দুই তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না করেই ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে যান। এদিকে, পুলিশের রাজস্ব বাজেটের প্রকল্পগুলোয় তহবিল নেই, তাই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্য পরিশোধ করতে না পারায় কাজ বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা। গত ১৯৯৭ইং সন থেকে নান্দাইল হাইওয়ে পুলিশ ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনে কার্যক্রম শুরু করে। সেখানে প্রায় ২৪ বছর ভাড়ায় থাকার পর ভবনের সংস্কার কাজ করার ফলে ভাড়া ছাড়তে হয়। নান্দাইল হাইওয়ে থানার নিজস্ব জায়গা ক্রয় করে ২০১৯সনে চার তলা বিশিষ্ট ভবনের কাজ নিমার্ণ শুরু হয়। পরে দ্বিতীয়বার ২০২১সনে নির্মানাধীন ভবনের সংলগ্ন ব্যক্তি মালিকাধীন দ্বিতল ভাড়া ভবনে শুরু হয় নান্দাইল হাইওয়ে থানা কার্যক্রম। গত ৪ বছর ধরে ব্যক্তি মালিকাধীন ভাড়া ভবনে চলছে হাইওয়ে থানা কার্যক্রম। নান্দাইল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ খোরশেদ আলম জানান, হাইওয়ে থানা পুলিশের ৩৩ জন সদস্য ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের কানারামপুর থেকে জামতলা পর্যন্ত সড়কে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান থানা ভবনের বাসা ভাড়া ২৫ হাজার টাকা। পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা না থাকা, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো রাখার জায়গা না থাকায় প্রতিনিয়তই সমস্যায় পড়তে হয় পুলিশের। ২০১৯ সালে নান্দাইল হাইওয়ে থানা পুলিশের আবাসন, পয়োনিষ্কাশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকট লাঘবে স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপ। গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর থানা ভবন নির্মাণের জন্য কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ হাইওয়ে সড়কের পাশে এক একর জমি অধিগ্রহণ করে। পরে ২০১৯ সনের থানা ভবন নির্মাণে দরপত্র আহবান করা হয়। ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইতলা থানা ভবন নির্মাণে এনএইচ এন্টারপ্রাইজ নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পাইলিংয়ের কাজ শুরু করে। পরে দ্বিতীয় দফা ৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন ও চার তলার কাজ শুরু করে নীম ডেভলমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং নাটোর নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভবন নির্মাণ সংশ্লিষ্ট দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ কাজের বিল না পাওয়ায় তারা অসম্পন্ন অবস্থায় নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। এই প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তর ময়মনসিংহ নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন,পুলিশের রাজস্ব বাজেটের প্রকল্পগুলোতে তহবিল নেই। একতলা ও দুই তলায় একজন ঠিকাদার,তিন ও চার তলায় আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছিল। প্রথম ঠিকাদার দ্বারা একতলা ও দুই তলায় বাহিরের কাজ শেষ হলেও ভিতরে কিছু কাজ বাকি আছে। আমি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপরে সঙ্গে কথা বলেছি। তহবিল আসলেই কাজ শুরু করা হবে।