সদ্যপ্রয়াত তালাত মাহমুদ’র পরিবারের সাথে নকলা প্রেসক্লাব পরিবারের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়

নাম :রেজাউল হাসান প্রকাশিত: ১৪ এপ্রিল , ২০২৪ ০৬:২৮ আপডেট: ১৪ এপ্রিল , ২০২৪ ০৬:২৮ এএম
সদ্যপ্রয়াত তালাত মাহমুদ’র পরিবারের সাথে নকলা প্রেসক্লাব পরিবারের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়
বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অন্যতম কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক, জিল বাংলা সাহিত্য পুরষ্কার প্রাপ্ত লেখক, নকলা উপজেলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শেরপুর ও নকলা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য, বিভিন্ন সাহিত্য কবি লেখক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপদেষ্টা, কবি সংঘ বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট কবি কলামিস্ট সদ্যপ্রয়াত তালাত মাহমুদ-এঁর পরিবারের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন নকলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকগন।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অন্যতম কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক, জিল বাংলা সাহিত্য পুরষ্কার প্রাপ্ত লেখক, নকলা উপজেলা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শেরপুর ও নকলা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সদস্য, বিভিন্ন সাহিত্য কবি লেখক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপদেষ্টা, কবি সংঘ বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট কবি কলামিস্ট সদ্যপ্রয়াত তালাত মাহমুদ-এঁর পরিবারের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন নকলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকগন।

বুধবার শেষ বিকেলে নকলা পৌরশহরের গ্রীণরোড়স্থ তালাত মাহমুদের ভাড়া বাসায় গিয়ে নকলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকগন পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ-উল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিমিয় করার পাশাপাশি সার্বিক খোঁজখবরনেন। সাংবাদিকগন সদ্যপ্রয়াত তালাত মাহমুদ-এঁর সহধর্মীনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমাউল হুসনা’র সাথে ঘন্টাব্যাপি স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা করেন। আলোচনা চলাকালে আসমাউল হুসনা তার স্বামীর অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করণে সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। বিশেষ করে কবি কলামিস্ট তালাত মাহমুদ-এঁর অপ্রকাশিত কবিতা গুলো কাব্যগ্রন্থাকারে ও কলাম গুলোকে কলামসমগ্র আকারে প্রকাশের ক্ষেত্রে সকল সাংবাদিকদের সহযোগিতামূলক সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। এছাড়া তালাত মাহমুদের রেখে যাওয়া একমাত্র ছেলে তানসেন মাহমুদ ইলহামের অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তালাত মাহমুদ-এঁর স্ত্রী আসমাউল হুসনা।

প্রেসক্লাবের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম লালন তার অনুরুদ্ধ প্রকাশনী থেকে তালাত মাহমুদ-এঁর অপ্রকাশিত কবিতা গুলোকে কাব্যগ্রন্থাকারে ও কলাম গুলোকে কলামসমগ্র আকারে প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপামি যেকোন প্রকাশনার ক্ষেত্রে আশ্বাস প্রদান করেন। তাছাড়া পারিবারিক যেকোন প্রয়োজনে পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাসদেন ক্লাবটির সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবুসহ অন্যান্যরা।

এসময় ক্লাবের সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সেলিম রেজা, প্রচার সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম রিজন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম লালন, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল-আমিন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান সৌরভ, সিনিয়র সদস্য আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান, সদস্য আব্দুর রফিক, মোফাজ্জল হোসেন, রেজাউল হাসান সাফিত, তরুণ সাংবাদিক হাসান মিয়া ও গোলাম আহম্মেদ লিমনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, তালাত মাহমুদ ৩ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ইন্তকাল করেন। সোমবার (৪ মার্চ) সকাল ১১টায় শেরপুর জেলা শহরের তেরাবাজার জামিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রথম জানাযা নামাজ এবং দুপুর ২:৩০ মিনিটের সময় জেলার নকলা উপজেলাধীন ৯নং চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা নিজের গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

তালাত মাহমুদের মৃত্যুতে শেরপুর-জামালপুর অঞ্চলের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে সবাই মনে করেন। আশির দশকের আলোড়নসৃষ্টিকারী কবি সাংবাদিক ও কলামিস্ট তালাত মাহমুদ ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ আগস্ট শেরপুরের চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রচণ্ড সাংগঠনিক কর্মক্ষমতার অধিকারী ও ক্ষুরধার লেখনীর আপোসহীন কলমসৈনিক তালাত মাহমুদ ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পাশ করার পর একইসাথে এলএলবি ও ময়মনসিংহ আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেন। তার পিতা মনিরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের একজন পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তালাত মাহমুদ জাতীয় লেখক কবি শিল্পী সংগঠন ‘লেকশি’ এবং ‘কবি সংঘ বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় সাড়াজাগানো ‘জিলবাংলা সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।

তার প্রথম গ্রন্থ ‘স্বর্গের দ্বারে মর্তের চিঠি’ ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। নীলকন্ঠ কবি তালাত মাহমুদ সাপ্তাহিক জামালপুর বার্তার প্রথম বার্তা সম্পাদক, দৈনিক দেশবাংলার সম্পাদনা পরিষদ সদস্য, আজকের বাংলাদেশের সহকারী সম্পাদক, সাপ্তাহিক সফিয়ার সম্পাদক (অর্পিত দায়িত্ব), বিলুপ্ত সাপ্তাহিক জনকন্ঠ’র প্রধান সহকারি সম্পাদক, দৈনিক ঢাকা রিপোর্ট-এর প্রধান সহকারী সম্পাদক, সাপ্তাহিক শেরপুরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সাপ্তাহিক পূর্বকথা’র সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও প্রধান সম্পাদক, সাপ্তাহিক ঝিনাই-এর উপদেষ্টা সম্পাদক, পল্লীকন্ঠ প্রতিদিনেব সহযোগী সম্পাদকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ইত্তেফাক, ইনকিলাব, জাহান, সচেতনকন্ঠ, দশকাহনীয়া, কালের ডাক, পল্লীকন্ঠ প্রতিদিন, ভোরের আলো, শ্যামলবাংলা ২৪ ডটকম, শেরপুর টাইমস ডট কম, বাংলার কাগজ, আজকের পত্রিকা, ভোরের আকাশসহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তার সম্পাদিত সাহিত্য পত্রিকা ‘সাহিত্য দর্পণ’ (১৯৭৩-১৯৮৬) ও ‘আমরা তোমারই সন্তান’ (১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রকাশিত)। তালাত মাহমুদ মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি কবি সংঘ বাংলাদেশ-এর সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টের সহযোগী সম্পাদক, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সেচ্ছাসেবী ও পেশাজীবী সংগঠনের উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে শেরপুরের সাহিত্য ও সাংবাদিকতা জগতে অপুরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo