নাটোরের লালপুরে ৬ কিলোমিটার খালের পাড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের (চিনিকল) ও বন বিভাগের সমন্বয়হীনতার প্রতিবাদে ও বর্ষা শেষ হওয়ার আগে প্রস্তাবিত সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগষ্ট) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস, লালপুর উপজেলা শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আওতায় নরেন্দ্রপুর, পরীক্ষামূলক ও কৃষ্ণা কৃষি খামারে পৃথক ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খনন করা হয়। খালের দুই পাশে সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নেয়া হলে প্রকল্প অনুমোদিতও হয়। পরিবেশ রক্ষা এবং উত্তপ্ত লালপুরে ছায়া সৃষ্টি তাদের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল কর্তৃপক্ষ ওই জমিতে গাছ লাগাতে না দিয়ে বরং ঘাস লাগানোর জন্য লিজ প্রদান করে, যার ফলে প্রকল্পটি থমকে যায়।
উপজেলা বন কর্মকর্তা এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রকল্প অনুমোদন হয়ে গেছে। কিন্তু মিলের সংলগ্ন এলাকায় গাছ লাগাতে অনুমতি দিচ্ছে না তারা। মৌখিক ও লিখিতভাবে জানালেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। বর্ষাকাল শেষ হয়ে গেলে আর গাছ লাগানো সম্ভব হবে না।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, লালপুর দেশের সবচেয়ে উষ্ণ উপজেলা। অথচ মিল কর্তৃপক্ষ বন বিভাগের বনায়ন উদ্যোগে বাধা দিচ্ছে। মিলের ধোঁয়া ও তরল বর্জ্যে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, তার ওপর আবার গাছ লাগানো বন্ধ রাখা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। গাছ লাগানোর মৌসুম এখনই। বর্ষাকাল চলে গেলে পরিবেশের জন্য বড় ক্ষতি হবে। মিল কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল নিজেরাই গাছ লাগানো, বাধা নয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন গ্রীন ভয়েস লালপুর শাখার উপদেষ্টা আব্দুল মোত্তালেব রায়হান, সভাপতি সজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, বৃহত্তর আব্দুলপুর মানবিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাওসার আলম সবুজ, নাটোর জেলা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল বাকী, আহত জুলাই যোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
এ বিষয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বন বিভাগ চূড়ান্ত আলোচনার বাইরে সরাসরি চুক্তিপত্র নিয়ে আসে, যা সরকারি প্রক্রিয়াগত নিয়মের পরিপন্থী। বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।খালের জমি এরই মধ্যে ঘাস লাগানোর জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে।