দ্বিতীয়ধাপে অনুষ্ঠিতব্য লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের আপন ভগ্নিপতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এবং নৌকা প্রতিক নিয়ে বিপুল ভোটে নির্বাচিত বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ। এরই মধ্যে তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রির্টানিং কর্মকতা। নির্বাচনে জিততে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি রাত-দিন। আওয়ামীলীগের দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় উপজেলা জুড়ে তাকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
প্রার্থীদের মনোনয়ন জমাদানের আগ পর্যন্ত এ উপজেলায় বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মারুফ বিন জাকারিয়া চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালালেও দলের তৃণমুল নেতাদের বর্ধিত সভায় মামুনুর রশিদকে দলের একক চেয়ারম্যান প্রার্থী করতে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তাই বাধ্য হয়ে দলের সিদ্ধান্তে মারুফ বিন জাকারিয়া আবারো ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবেই নির্বাচনে লড়ছেন। এদিকে আওয়ামীলীগ থেকে দুই বারের বহিস্কৃত নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার আলতাফ হোসেন হাওলাদার অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
নান্টু শেখ নামে একজন আওামীলীগ কর্মী বলেন অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ সংসদ সদস্যের ভগ্নিপতি হলেও তিনি ৯৭ সালে থেকে দলের সভাপতি। নুর উদ্দিন নয়ন চৌধুরী এমপি হওয়ার আগে থেকে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান এবং দলের বিশ^স্ত এবং কর্মী বান্ধব নেতা। মামুন ভাই প্রার্থীতা প্রত্যার করলে এখানে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত আলতাফ মাষ্টার বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় চেয়ারম্যান হবেন। দলের হাইকমান্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা রায়পুরের ক্ষেত্রে বিবেচনা না করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রায়পুর ডাকাতিয়া নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি সংস্কৃতিকর্মী সাংবাদিক প্রদীপ কুমার রায় বলেন, একদিকে আওয়ামীলীগ বলছে সবাই নির্বাচন করতে পারবে। কোন দলীয় প্রতিক থাকবে না। আবার তারাই বলছেন এমপি মন্ত্রীর আত্মীয় হলে নির্বাচন করতে পারবে না। এটি স্ব-বিরোধিত সিদ্ধান্ত।মামুনুর রশিদ আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতিক নিয়ে আওয়ামীলীগের টিকেটে নির্বাচিত কোন প্রার্থী নন। কাজেই তার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার ইচ্ছেটা সাংবিধানিক অধিকার। আওয়ামীলীগের মতো নির্ভরযোগ্য দলের কাছে স্ববিরোধী কথাবার্তা কিউই প্রত্যাশা করে না।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ বলেন, আমি ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ছিলাম। ১৯৯১ থেকে ২০০৩ অবধি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছি। রায়পুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ:সভাপতি ছিলাম ২০০৩ – ২০১৫ সাল পর্যন্ত। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি শত প্রতিকুলতা মোকাবেলা করে। ২০২৩ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে এখনো সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি নিষ্ঠা এবং সততার সাথে। ২০১৯ সাল থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এমপি মহোদয় আমার আত্মীয় হলেও ২০২১ সালে তিনি সংসদ সদস্য হয়েছেন। তার আগে থেকেই আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তাই আমার বেলায় এ ধরনের নির্দেশনা নাও হতে পারে। আর আমাদের কাছে কেন্দ্রীয়ভাবে লিখিত কোনো নির্দেশনাও আসেনি।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। রোববার (২১ এপ্রিল) রায়পুর উপজেলা পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ভোট গ্রহণ ২১ মে।