হিমালয়ের কোল ঘেঁষা দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বর্নীল পাপড়ি মেলেছে বিদেশিনী টিউলিপ। আর তারই টানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। শীতপ্রবন হওয়ায় তৈরি হয়েছে বানিজ্যিক ভাবে টিউলিপ চাষের অর্থনৈতিক নতুন সম্ভাবনা। পর্যটন শিল্পে অপার সম্ভাবনাময় এ খাত বিস্তারে আরো গবেষনা ও সরকারী সহযোগীতা কামনা করছেন তেঁতুলিয়া দর্জিপাড়ার টিউলিপ চাষীরা। দেশের ভেতর এ যেন একটুকরো নেদারল্যান্ডস। যেদিকে চোখ যায়, বর্ণীল টিউলিপের নজরকারা সৌন্দর্যে প্রশান্তিতে ভরে যায় মন। চারদিকে নানা রঙের পাঁপড়ি মেলে হাসছে এক একটা আদুরী টিউলিপ। এটি শীতপ্রধান দেশের দামী ফুল। দেশ বিদেশের সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের কাছে এর চাহিদা ব্যাপক। টিউলিপ চাষ করতে ৮ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। বাংলাদেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দীর্ঘ সময় ধরে শীতকাল স্থায়ী হওয়ার কারনে তা ইতোমধ্যেই অনুকুল বলে প্রমানিত হয়েছে টিউলিপ চাষের জন্য। ২০২২ সালে প্রথম শুরুর পর তেঁতুলিয়ায় এবছরও ৪র্থ বারের মত বাণিজ্যিকভাবে করা হয়েছে টিউলিপ ফুলের চাষ। বর্তমানে সৌন্দর্য পিপাসুদের মন রাঙাতে নানা রঙের পাপড়ি মেলে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সুন্দরী বিদেশিনী টিউলিপ। আর তারই টানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। বেসরকারী এনজিও ইএসডিওর বাস্তবায়নে তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের নারী ও পুরুষ মিলিয়ে মোট ২৬জন ক্ষুদ্র চাষীদের দ্বারা গড়ে উঠেছে এই টিউলিপ চাষ প্রকল্প। এবছর ৭০ শতক জমিতে বপন করা হয়েছে ৯ প্রজাতির ২০ হাজার টিউলিপ ভাল্ব। বর্তমানে নানা রঙের টিউলিপ ফুলে ভরে আছে পুরো বাগান। টিউলিপের মুগ্ধতা আর পর্যটকদের পদচারনায় খুশি চাষী উদ্যোক্তারা। টিউলিপ বাগানকে ঘিরে জেলার পর্যটন ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা সৃষ্টি করতে পেরে উচ্ছসিত কর্তৃপক্ষও। তবে, বিদেশ থেকে টিউলিপের ভাল্ব আনা সহ টিউলিপকে কেন্দ্র করে পর্যটন বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকারের বিশেষ সহযোগিতা কামনা করেছেন টিউলিপ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইএসডিওর তত্বাবধায়ক মোঃ আসাদুর রহমান। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থানের কারনে তেঁতুলিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে বেশ শীত থাকে। এরকম শীতে টিউলিপ চাষে সুবিধা রয়েছে এবং সেসাথে রয়েছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনাও। বাংলাদেশের জলবায়ুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টিউলিপ ফুলের জাত উদ্ভাবন করতে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে ব্যাপক গবেষণা। টিউলিপ চাষীদের নানা পরামর্শ সহ সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। মির্জা শাহরিয়ার, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, তেঁতুলিয়া বলেন আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে আরো ব্যাপক ভাবে টিউলিপ চাষ করা গেলে সেটা তেঁতুলিয়ায় পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করা সহ এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। গবেষনার মাধ্যমে এখানকার আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্য রেখে টিউলিপের নতুন জাত উদ্ভাবনেরও তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা।