যশোর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি কার্যক্রম শীর্ঘই বাস্তবায়ন হচ্ছে বিলুপ্ত হচ্ছে উপশহর ইউনিয়ন

এসএম মিরাজুল কবীর টিটো প্রকাশিত: ১৭ মার্চ , ২০২৪ ১০:২০ আপডেট: ১৭ মার্চ , ২০২৪ ১০:২০ এএম
যশোর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি কার্যক্রম শীর্ঘই বাস্তবায়ন হচ্ছে বিলুপ্ত হচ্ছে উপশহর ইউনিয়ন
যশোর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি কার্যক্রম শীর্ঘই বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে করে নওয়াপাড়া, আরবপুর, ফতেপুর ও চাঁচড়া ইউনিয়নের কিছু সীমানা অন্তর্ভূক্ত করে পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি করা হচ্ছে সেই সাথে এই সীমানা বৃদ্ধির করণে পুরো উপশহর ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, গেজেটভুক্ত এলাকাগুলো পৌরসভায় অর্ন্তভুক্তির ব্যাপারে নিকার কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হলে সীমা বৃদ্ধি কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে।

যশোর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি কার্যক্রম শীর্ঘই বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে করে  নওয়াপাড়া, আরবপুর, ফতেপুর ও চাঁচড়া ইউনিয়নের কিছু সীমানা অন্তর্ভূক্ত করে পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি করা হচ্ছে সেই সাথে এই সীমানা বৃদ্ধির করণে পুরো উপশহর ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, গেজেটভুক্ত এলাকাগুলো পৌরসভায় অর্ন্তভুক্তির ব্যাপারে নিকার কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।  শুধু জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক)  অনুমোদন হলে সীমা বৃদ্ধি কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে।

 ইউনিয়নসূত্রে জানা গেছে, যশোর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সদরের ৬টি ইউনিয়নের কয়েকটি মৌজা অন্তভূক্ত করে শহর ঘোষণা করে একটি গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিভাগটির উপসচিব আ ন ম ফয়জুল হক স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এটি জানানো হয় গেজেটে উপশহর ইউনিয়নের বিরামপুর মৌজার ১১৩ দাগ, শেখহাটি মৌজার ১৮৫ দাগ, কিসমত নওয়াপাড়ার ৬৯৭ দাগ, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের নওদাগ্রামের ১ থেকে ৩৫০ দাগ, আরবপুর ইউনিয়নের খোলাডাঙ্গার ২৩৫ দাগ, ফতেপুর ইউনিয়নের ঝুমঝুমপুর মৌজার ৩১০ দাগ, বালিয়াডাঙ্গা মৌজার ৪৪০ দাগ, রামনগর ইউনিয়নের রামনগর মৌজার ৪৭৮ দাগ, মুড়লি মৌজার ১৬২ দাগ, মোবারককাঠি মৌজার ৩৫৫ দাগ ও চাঁচড়া ইউনিয়নের চাঁচড়া মৌজার ৪১৩ দাগ শহর ঘোষণা করা হয়।

উপশহরের রিরামপুর এলাকা যশোর পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণের সাথে কেন অন্তর্ভুক্ত হবে না? এই মর্মে পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে যশোর পৌরসভায় চিঠি দেয়া হয়। ফলে পৌরসভার সীমানা সম্প্রাসরণের কাজে জটিলতা বাধে। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি যশোরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত এলাকার দাগ, এলাকার অর্থনৈতিক গুরুত্ব, অবকাঠামোগত সুবিধার বিবরণ, পৌরসভার বিদ্যমান এলাকার, সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত জমির ফসলের বিবরণ উল্লেখ করে প্রস্তাব পাঠানো হয়। তারপর থেকে নিকার কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল যশোর পৌরসভা। সম্প্রতি উপশহর ইউনিয়নের পুরোটাই শহর ঘোষণা করে পৌরসভায় অর্ন্তভুক্তের সিদ্ধান্ত হয় ওই কমিটির সভায়।

সূত্রমতে, অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল ইমপ্লিমেনটেশন কমিটি ফর অ্যাডমিনিসট্রেটিভ রিঅরগানাইজেশনÑনিকার’ কমিটি শহর ঘোষিত এলাকা যশোর পৌরসভায় অর্ন্তভুক্তের অনুমতি দেয়ায় সব কিছু এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আগামী তিন মাসের মধ্যে সীমানা নির্ধারণসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে এলাকাগুলো পৌরসভাভুক্ত হবে। এতে পৌরসভার আয়তন অনেক বেড়ে যাবে।প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছির জানান, নিকার কমিটির অনুমোদনের ভিত্তিতে শহর ঘোষিত এলাকাগুলো মৌজা অনুযায়ী পৌরসভায় অর্ন্তভুক্ত হবে।মৌজাগুলো হচ্ছে রামনগর ইউনিয়নের রামনগর ৪৭৮ মৌজার, মুড়লী ১৬২ মৌজার, মোবারককাঠি ৩৫৫ মৌজার ও চাঁচড়া ইউনিয়নের চাঁচড়া ৪১৩ মৌজা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু বিরামপুরের সম্পন্ন মৌজা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আংশিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একই বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চেয়ারম্যানদের ডিসি অফিসে নিয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী গুলো যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন এ গেজেট প্রকাশ করেন। ওই এলাকা গুলোতে পৌরসভার সেবা না পৌঁছালেও সেখানকার বাসিন্দাদের পৌরসভার 'নির্ধারিত হার অনুযায়ী বাড়ির খাজনা দিতে হচ্ছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন সাক্ষরিত চিঠি আসে যশোর পৌরসভায়। তাতে উল্লেখ করা হয় 'স্থানীয় সরকার বিভাগ বিরামপুর মৌজা আংশিকভাবে অন্তর্ভুক্ত না করে সম্পূর্ণ মৌজাটি সম্প্রসারণযোগ্য এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করে চুড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে সংশোধিত চুড়ান্ত প্রজ্ঞাপন নিকার সভায় উত্থাপন করার কথা ছিল। একই বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চেয়ারম্যানদের ডিসি অফিসে নিয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী গুলো যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ¯’ানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় যশোর শহর সংলগ্ন ৬টি ইউনিয়নের ৭ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌর এলাকা বিস্তৃত হতে চলেছে। ইতোমধ্যে যার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ অনুযায়ী যশোর পৌরসভার এই সীমানা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় যার গেজেট প্রকাশ করে গত বছরের ২৪ আগস্ট। আর আপত্তির আবেদনের সময় শেষ হলে গত ১৫ জুলাই চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই গেজেট অনুযায়ী উপশহর ইউনিয়নের বিরামপুর, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের নওয়াপাড়া, শেখহাটি, কিসমত নওয়াপাড়া, আরবপুর ইউনিয়নের খোলাডাঙ্গা, নওদাগ্রাম মৌজা, ফতেপুর ইউনিয়নের ঝুমঝুমপুর, বালিয়াডাঙ্গা মৌজা, রামনগর ইউনিয়নের রামনগর, মুড়লী, মোবারককাটি এবং চাঁচড়া ইউনিয়ন পৌরসবার সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।

গেজেট প্রকাশের আগে জানা যায়, সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বেশ কিছু অংশ পৌরসভার সাথে যুক্ত হচ্ছে। নির্ধারিত কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর এসব জায়গা পৌর এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। ইতিমধ্যে যেসব ইউনিয়নের অংশ বিশেষ পৌরসভায় অন্তর্ভূক্ত হবে সেসব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়। যশোর পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণ সংক্রান্ত প্রকাশিত গেজেটে বলা হয়েছিল, কোন ইউনিয়ন পরিষদের যদি এই সীমানা সম্প্রসারণ নিয়ে কোন আপত্তি থাকে গেজেটটি প্রকাশের তারিখ হতে অনূর্ধ্ব ৩০ দিনের মধ্যে আপত্তি জানাতে হবে। আপত্তির বিষয়টি নিয়মানুযায়ী ৩ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা হবে।

এই বিভাগের আরোও খবর

Logo