বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। নতুন সূর্যের আলোয় ভেসে উঠেছে নতুন প্রত্যাশা। ঠিক এমন সময়েই নরসিংদী পৌর এলাকায় গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে এগিয়ে এলেন একজন স্থানীয় যুবক—মো. আলমগীর হোসাইন। পৌরসভার উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিয়ে পুরো বছরের জন্য ইজারা নিলেন সিএনজি ও অটোবাইক স্ট্যান্ডগুলো। উদ্দেশ্য একটাই—অরাজকতার পরিবর্তে সুশাসনের ভিত্তি স্থাপন।
পৌরসভার তথ্যমতে, ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকার দরেই এই ইজারা কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ১৫% ভ্যাট ও ৫% আয়করসহ সরকারি রাজস্ব জমা। ইতিমধ্যেই ইজারার অনুমোদনপত্র পৌছে গেছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টেবিলে।
আরশিনগর, শিক্ষা চত্বর, ভেলানগর, পুরান বাসস্ট্যান্ড, শাপলা চত্বর, রজনীগন্ধাসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্ট্যান্ড এখন আলমগীর হোসাইনের তত্ত্বাবধানে।
এই যুবক জানালেন, “আমরা শুধু টোল তুলতেই আসিনি, এসেছি শৃঙ্খলা ফেরাতে। পৌরসভার নিয়ম মেনে সব কিছু চলবে। চাঁদাবাজি, বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম—কোনো কিছুর ঠাঁই থাকবে না। স্ট্যান্ড হবে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ, এবং যাত্রীবান্ধব।”
শহরের নিয়মিত যাত্রী ও চালকরা ইতোমধ্যেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন, “আগে কেউ কিছু বলার ছিল না। কে কোথায় দাঁড়াবে, কে কত টাকা চায়—সবই এলোমেলো ছিল। এবার মনে হচ্ছে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে।”
পৌরসভাও মনে করে, এই উদ্যোগটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং একটি প্রশাসনিক দৃষ্টান্তও। স্বচ্ছ ইজারা প্রক্রিয়া, নিয়মতান্ত্রিক নজরদারি এবং স্থানীয় অংশগ্রহণ—এই তিনে মিলে একটি জনবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
নববর্ষের সকালে শহরজুড়ে যেমন ছিল পান্তা-ইলিশ আর উৎসবের রং, ঠিক তেমনই গণপরিবহন স্ট্যান্ডগুলোতেও শুরু হয়েছে একটি নতুন যাত্রা—যা শুধু পরিবহন নয়, শহরের চলাচলের ছন্দকেই পাল্টে দিতে চায়।