ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে রাতে আঁধারে বসত ঘরে হামলা। ডাকাত সন্দেহে স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনি।
ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে রাতে আঁধারে বসত ঘরে হামলা। ডাকাত সন্দেহে স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনি। উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি । মামলার বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। থানায় অভিযোগ করেও লাভ হয়নি ভুক্তভোগীদের উল্টো হামলার শিকার হয়ে মামলার আসামি। এ কেমন আইন এমন প্রশ্ন ভুক্তভুগীর? প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। ঘটার সূত্রে জানাযায়, নিজের ভাইয়ের সাথে সম্পত্তিগত সমস্যা, কিন্তু অচেনা, ছাত্রলীগ নেতাসহ একদল যুবক ভিন্ন সময় বাড়িতে এসে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা, পিটিয়ে যখম করছেন পরিবারের সদস্যদের। আবার কখনো বাড়ির সামনে থাকা দোকানে করছেন ভাঙচুর নিয়ে গেছেন দোকানের মালামাল ও৷ অসহায়ত্ত্বের চিত্তে এমনি গঠনার বর্ণনা করেছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গাব্দেরগাঁও এলাকার বরকন্দাজ বাড়ির বৃদ্ধ বয়সী মো. আবু তাহের। বৃদ্ধ আবু তাহের জানান, আমার এক ভাইয়ের সাথে সম্পত্তিগত জটিলতার কারণে তিনটি মামলা চলমান আছে। সম্পত্তিগত বিষয়ের যের ধরে গত ১০ ই জুলাই একদল বহিরাগত কিশোর আমার বাড়িতে হামলা চালায় আমার স্ত্রী কুলসুমা বেগম কে রক্তাক্ত করে এবং আমার ছোট ছেলে দিদার হোসেন কে বেদরম মারে৷ বাড়ি-ঘর চাইনিজ কুড়াল দিয়ে ভাংচুর করে। বাড়ির সামনে আমার একটি দোকান ভাড়া দিয়েছি, দোকানদারকে মারধর করে দোকানের জিনিস পত্র লুট করে এবং দোকানকে এই দোকানটি ছেড়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দেয়। পরে দোকানদার দোকানটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। চলতি মাসের ১১ তারিখে রাতে আনুমানিক এগারোটায় পাঁচ-ছয়টি মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে কয়েকজম। আমি আমার ওয়াইফ ও মেঝো ছেলে বাড়িতে ছিলাম। আমার মেঝো ছেলেকে বেদম মারধর করে এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে তারা। আমরা আত্মরক্ষার্থে চিৎকার করলে চারদিক থেকে এলাকার মানুষ এগিয়ে আসে এবং গভীর রাতে সাধারণ মানুষের হাতে ডাকাত সন্দেহে তাদের কয়েকজন মার খায়। এলাকার মানুষের তোপের মুখে পরে এক পর্যায়ে তারা একটি মোটর সাইকেল ও চুরি (দেশীয় অস্ত্র) ফেলে রেখে যায়। পরে আমার বড় ছেলে বিষয়টি থানায় জানালে থানা পুলিশের একজন চুরিও মোটর সাইকেল উদ্ধার করে। এরপর থেকে আমাদের চতুর দিক থেকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা পুরো পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। মামলা না তুললে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন জিসান,বিল্লাল, কাজল রেহানরা। আমরা প্রশাসনের কাছে সুস্থ বিচার দাবি করছি। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) গভীর রাতে হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. আবু তাহেরের বড় ছেলে মোঃ আবুল হোসেন বাদী হয়ে মোঃ জিসান, মোঃ বিল্লাল হোসেন, মোঃ রায়হান খাঁন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জনকে বিবাদী করে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।থানায় অভিযোগ দায়ের করা মোঃ আবুল হোসেন জানান, আমার দাদির সম্পত্তি নিয়ে বাপ-চাচাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা চলে আসছে এবং এটি নিয়ে আদালতে মামলা ও চলমান আছে। এর আগে গত ১০ জুলাই একদল যুবক আমার ছোট ভাইয়ের হাতে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কোপ দেয়। যখমকৃত স্থানে চারটি সেলাই করতে হয়েছে। এবং সেদিন আমার মাকেও মারধর করে। এই ঘটনার পর আমি থানায় মামলা দিতে গেলে তখনকার সময়ে দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে থানায় মামলা দিতে পারিনি৷ পরে বাধ্য হয়ে চাঁদপুর কোর্টে মামলা দায়ের করি। সরকার পরিবর্তনের পর মামলায় তদন্ত বন্ধ হয়ে যায় পরে সাম্প্রতিক মামলা তদন্ত শুরু হলে আমাদের দেয়া মামলার আসামী জিশান, বিল্লাল ও কাজল সহ ৮/১০ জন মিলে গত ১১ অক্টোবর রাতে আবার আমাদের উপর হামলা চালায়। সেদিন আত্মরক্ষার্থে আমরা চিৎকার চেঁচামেচি করলে স্থানীয় লোকজন তাদের প্রতিহত করে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় আবু তাহের ঘরের দরজা এবং জানালায় অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এবং তার ভাড়া দেয়া দোকানটির দোকানদার দোকানটি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র দোকান দিয়েছেন। হামলার শিকার হওয়া দোকানদার সোহেল জানান, আমি দোকান ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছিলাম। একদিন এক গ্রুপ ছেলে আসে এবং হোসেনদের বাড়িঘর এবং আমার দোকান কোপায় ও দোকান থেকে আমার মালামাল নিয়ে যায়৷ কয়েকদিন আগে গভীর রাতে জিসান সহ কয়েকজন মিলে পাঁচটা মোটরসাইকেলে প্রায় ১৫ জন এসে ওই বাড়িতে ডুকে। আমরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার শুনে এলাকাবাসী মিলে এগিয়ে গেলে তারা একটি মোটর সাইকেল, চুরি ও কয়েক জোড়া জুতা রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জানান সেদিন রাতে অন্য এলাকা থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে হোসেনদের বাড়িতে হামলা করে আমরা চিৎকার শুনে এলাকাবাসী সহ এগিয়ে যাই। পরে আমরা সবাই এগিয়ে গেলে তারা একটি মোটর সাইকেল ও একটি চুরি রেখে পালিয়ে গেলে থানা পুলিশের হাতে আমরা সেগুলো তুলে দেই৷ গঠনার অভিযুক্ত ও গণপিটুনির শিকার ছাত্রলীগ নেতা জিসান বলেন, এই বিষয়ে নিউজ কইরেন না। তারা আমাকে মেরে কি অবস্থা করছে। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি। ১১ অক্টোবর রাতে ঘটনাস্থল থেকে মোটর সাইকেল ও ছুরি উদ্ধার করা ফরিদগঞ্জ থানার এস.আই মাহবুবুর রহমানের কাছে এই বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।