ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া আমাদের দায়িত্ব : মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ঐতিহাসিক কোল্লাপাথর শহিদ সমাধিস্থল পরিদর্শন করেছেন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আযম বীর প্রতীক এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী। গত রবিবার দুপুরে বিজয়ের মাসে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তারা এই সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় উপদেষ্টা ফারুক ই আযম বীর প্রতীক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন, অথচ তালিকাভুক্ত হয়েছেন, তারা জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাদের শনাক্ত করা এবং তালিকা থেকে বাদ দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। এই কাজটি জাতিগতভাবে আমাদের সবার সমন্বয়ে করতে হবে।তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রকাশ করতে সরকার ইতোমধ্যে অনলাইনে ডাটাবেস তৈরি করেছে। সাধারণ জনগণের জন্য আপত্তি ফরমের সুযোগ রাখা হয়েছে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতে আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করছি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা এলাকাবাসীর কাছে সবসময়ই পরিচিত। আমরা সেসব তথ্যও যাচাই করছি।তিনি বলেন, এই সমাধিস্থল আমাদের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী শহিদদের চিরন্তর স্মারক। এখানে যারা শায়িত, তারা দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে এক অভিন্ন স্বপ্নের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের এই আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয়। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম এই ইতিহাসকে জানুক এবং এর মর্যাদা রক্ষা করুক।ফারুক ই আযম আরও বলেন, আমাদের দায়িত্ব শুধু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের চিহ্নিত করাই নয়, বরং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা। আমাদের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধারা জাতির অহংকার। তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।তিনি আরো বলেন, কোল্লাপাথর এ সমাধিস্থলটি রক্ষণা-বেক্ষন এবং স্থায়ী ভাবে সংরক্ষন করতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী এসেছেন। একটি প্রকল্প তৈরী করে তার উন্নয়ন করা হবে।পরিদর্শনের সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ও সাধারণ জনগণ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তারা বলেন, কোল্লাপাথর শহিদ সমাধিস্থল মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায়ের প্রতীক। সরকারের এই উদ্যোগ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে গুরুত্ব ভূমিকা রাখবে।আগামী নির্বাচনের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, জাতির মধ্যে একটি প্রচন্ডের ঐক্যের আবহের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা সংস্কার থেকে শুরু করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাব। এটাই আমাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। কাউকে বিচ্ছিন্ন রেখে না। সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সংস্কারের ব্যাপারে তিনি বলেন, যে কমিশনগুলি হয়েছে, তাদেরকে ডিসেম্বরের মধ্যে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। হতে পারে কারো কারোর জানুয়ারির দুই-এক সপ্তাহ লাগতে পারে। রির্পোট পাওয়ার পর জনসম্মুখে যাবে। রাজনৈতিক দল, জনগন চেক হোল্ডার তাদের সাথে বলে আমরা যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে সরকার।উপদেষ্টা ও সচিব ঢাকা থেকে সড়ক পথে কসবার এ কোল্লাপাথর শহিদ সমাধিস্থলে আসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার, সহকারি কমিশনার (ভুমি) মো. গোলাম সরোয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তামো. আবদুল কাদেরসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি ও সংবাদ কর্মীরা।